বর্তমানে অনেক ভারতীয় শিক্ষার্থীর গ্রিনকার্ড বাতিল হয়েছে, অস্থায়ী কাজের ভিসাও ঝুঁকিতে রয়েছে এবং এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের শনাক্ত করা হচ্ছে। এমনকি ছোটখাটো অপরাধ যেমন দোকানে চুরি বা দ্রুত গাড়ি চালানোর মতো কারণে ভারতীয় শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল করা হচ্ছে। ভিসা বাতিল হলে শিক্ষার্থীদের ১৫ দিনের মধ্যে স্বেচ্ছায় দেশত্যাগ করতে বলা হচ্ছে।
কিন্তু এর কোনো বিকল্প আছে কি? এই ভিসা বাতিলের পদক্ষেপগুলো ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অভিবাসন নীতির অংশ। ভারতীয় শিক্ষার্থীরাই এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক ছাত্রগোষ্ঠী। ওপেন ডোরসের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩-২৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১১ লাখ ২৬ হাজার ৬৯০ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ছিল, যারা দেশের অর্থনীতিতে প্রায় ৪৩.৮ বিলিয়ন ডলার অবদান রেখেছে । নভেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত, ভারতীয় শিক্ষার্থীদের সংখ্যা চীনা শিক্ষার্থীদের ছাড়িয়ে যায়।
শিক্ষার্থীরা সাধারণত এফ-১ ভিসা (একাডেমিক কোর্স), এম-১ ভিসা (কারিগরি শিক্ষা), এবং জে-১ ভিসা (বিনিময় প্রোগ্রাম) নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে। কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ভারতীয়দের জন্য শিক্ষার্থীদের ভিসা অনুমোদনের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে যা ২০২৩ অর্থবছরের তুলনায় ২০২৪ সালে ৩৪% কম। আমেরিকান ইমিগ্রেশন লয়্যারস অ্যাসোসিয়েশন একটি নীতিমালা প্রকাশ করেছে যেখানে স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর ইনফরমেশন সিস্টেম (এইভিআইএস) রেকর্ড বাতিল হলে কী করা যেতে পারে, তা ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তবে এটি একটি ধীর এবং অনিশ্চিত প্রক্রিয়া।
যদি ভিসা বাতিল হয়, শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রে থেকেই অপসারণ প্রক্রিয়া মোকাবিলা করতে পারে। তারা নিজ খরচে আইনজীবীর সাহায্য নিতে পারে, সরকারের বিরুদ্ধে যুক্তি দিতে পারে এবং প্রমাণ করতে পারে যে তারা আইন অনুযায়ী অপসারণযোগ্য নয়। আর সর্বশেষ বিকল্প হিসেবে দেশত্যাগের বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত। এ বিষয়ে অ্যাটর্নি রাজীব খান্না জানিয়েছেন, নির্বাহী আদেশ ১৪১৬১ এবং ১৪১৮৮-এর ফলে এখন এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের সোশ্যাল মিডিয়া পর্যন্ত স্ক্রীনিং করা হচ্ছে।
তাই শিক্ষার্থীদের উচিত ভিসা প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত ইমেইল নিয়মিত চেক করা, একাডেমিক অবস্থা ও এনরোলমেন্টের রেকর্ড রাখা, আন্তর্জাতিক ভ্রমণ এড়ানো, ভিসা বাতিল হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়তা নেওয়া। বর্তমান অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে ভারতীয় শিক্ষার্থীদের জন্য আইনি পরামর্শ নেওয়া, তথ্যের ওপর নজর রাখা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়তা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। সম্মিলিত সহায়তা ও সচেতনতা এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সাহায্য করতে পারে।
সূত্র : ইন্ডিয়া টুডে।
মন্তব্য করুন