ম্যাথু ও মাইকেল ইয়োল্ডেন যমজ ভাই। ২৫টি ভাষায় দখল আছে। এর বাইরে আরও একটি ভাষা পারলেও সেটা ঠিক গোনায় ধরা যায় না। কারণ, সে ভাষা তাঁরা নিজেরাই বানিয়েছেন, নিজেরাই ব্যবহার করেন।
অবশ্য ইয়োল্ডেন ভাইয়েরা এ ক্ষেত্রে প্রথম নন। যমজ ভাইবোনেরা প্রায়ই এমন নিজেদের ভাষা বানিয়ে থাকে। একে বলে ‘ক্রিস্টোফেজিয়া’। গ্রিক ভাষায় এর মানে ‘গোপন ভাষা’। যমজ শিশুদের প্রায় ৪০ শতাংশের এমন নিজস্ব ভাষা থাকে। কিন্তু বড় হতে হতে ওরা সে ভাষা ভুলে যায়। কারণ, সে ভাষায় অন্যদের সঙ্গে কথা বলা যায় না। অনেক সময় পরিবার থেকেও আসে বাধা। কারণ, ওরা কী বলছে, তা মা-বাবাও বুঝতে পারেন না। অনেক সময় আবার উল্টো ফলও ঘটে। তারা নিজেদের ভাষায় এতই অভ্যস্ত হয়ে যায় যে সাধারণ ভাষা শিখতেই কষ্ট হয়ে যায়। যেমনটা হয়েছিল জুন ও জেনিফার গিবনসের। ওরা কেবল নিজেদের মধ্যেই কথা বলত। নিজেদের ভাষায়। অন্য ভাষায় কথা বলতেই পারত না।
এমনিতে তাদের পরিবারের ভাষা মূলত ইংরেজি। মা-বাবা তাঁদের নিয়ে প্রথম বিদেশে যান স্পেনে। তাঁদের বয়স তখন ৮ বছর। আইসক্রিম কিনতে গিয়ে দেখেন, বিক্রেতা ইংরেজি বোঝেন না। তখন অভিধান ঘেঁটে ঘেঁটে কাজ চালানোর স্প্যানিশ শিখে ফেলেন তাঁরা। সেই শুরু। এরপর ইতালিয়ান শিখলেন। তারপর স্ক্যান্ডিনেভিয়ার ভাষাগুলো। এভাবে একে একে শিখে ফেলেন ২৫টি ভাষা। সেসব ভাষার চাপে নিজেদের ভাষা হারাবে কী! উল্টো সেসব ভাষার নিয়মে-উপকরণে আরও শক্তপোক্ত হতে থাকে তাঁদের ভাষা। তারপর যখন প্রথম কম্পিউটার হাতে পেলেন, ‘উমেরি’ লিপি বানানোর চিন্তাও করেছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত সে পরিশ্রম আর করেননি। তাঁরা মাত্র উমেরিভাষী, তার জন্য এত কষ্ট করা কি সাজে! লাতিন লিপি দিয়েই সে কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন দুই ভাই। দুজনেই এখন থাকেন স্পেনে। মাইকেল গ্রান্দ ক্যানারি দ্বীপে, ম্যাথু বাস্ক প্রদেশে। আর নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করেন উমেরিতে। গিয়েছিল ‘সাইলেন্ট টুইনস’ বা “নির্বাক যমজ”।
(তথ্যসূত্র: বিবিসি)
মন্তব্য করুন