ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়েছেন শেখ হাসিনা। ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙে দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুস। গণ অভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে গঠিত সরকারের ভিত্তি মূলত জনগণ। সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদের অধীন রাষ্ট্রের সব ক্ষমতার মালিক জনগণ। অনুচ্ছেদ ৪৮ অনুযায়ী বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রধান প্রেসিডেন্ট। সংবিধান ও দেশের আইন প্রদত্ত ক্ষমতা প্রয়োগ করে রাষ্ট্রের প্রধান হিসেবে রাষ্ট্রপতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈধতা দেন।
জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলনরূপে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার প্রায় তিন মাস অতিবাহিত হচ্ছে। সামগ্রিক পরিস্থিতির অস্বাভাবিকতা ও অরাজকতা কাটিয়ে ওঠার ক্ষেত্রে যতটা মনোযোগ প্রয়োজন ছিল, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেটা দিতে পেরেছে বলে মনে হয় না। যদিও তিন মাস সময় এই কাজে যথেষ্ট নয়, তবু দ্রব্যমূল্য, বাজার পরিস্থিতি ও শ্রমজীবী দরিদ্র জনজীবনের দুর্দশা লাঘবে ব্যর্থতা স্পষ্ট। আশাকরি সরকার এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
যেকোনো রাজনৈতিক আন্দোলনের সাফল্যের পেছনেও থাকে দীর্ঘদিনের লড়াই-সংগ্রাম শেখ হাসিনা সরকারের দুর্নীতি, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন নিয়মিত ছিল সেইসাথে নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংস করা নিয়ে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হয় তারই প্রতিফলন ঘটে জুলাই বিপ্লবে। ফ্যাসিবাদী শাসনের পতন কেবল ৩৬ দিনের আন্দোলনেই সংঘটিত হয়েছে এমনটা ভাবাটা ঠিক নয়, তেমনই এখানে একক কৃতিত্ব কারও নেই।
সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কাগজে-কলমে সংস্কারই যথেষ্ট নয়; সামগ্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনা ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন জরুরি। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রয়োজনীয় আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে দ্রুতই একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করা প্রয়োজন।
মন্তব্য করুন