আবুল কাসেম
৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ৯:০২ পূর্বাহ্ন
অনলাইন সংস্করণ

দেশমাতৃকার তরে এখনও সজীব পীরজাদা হোসেন আহমদ

মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের স্মৃতিচারণ নিয়ে লেখা বই “একাত্তরের বিজয়ফুল” মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে বীর মুক্তিযোদ্ধা পীরজাদা হোসেন আহমেদ

একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের লড়াকু সৈনিক, দক্ষ সংগঠক পীরজাদা হোসেন আহমদ খুলনা সিটি কলেজ হতে শিক্ষা সম্পন্ন করে যখন খুলনা ক্রিসেন্ট জুট মিলে যোগ দিলেন সেই সময়ে শুরু হয় স্বাধীনতার সংগ্রাম। শাহ আলম, ফকির সিরাজুল হক, এনামুল, নুরুন্নবী, আব্দুল মালেকসহ ছাত্র-যুব নেতাদের সংগঠিত করে কর্মরত প্রতিষ্ঠান খুলনা ক্রিসেন্ট জুট মিলে পাক হানাদার বাহিনীর আক্রমণের বিরুদ্ধে তিনি প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। সেই প্রতিরোধে সক্রিয় ভূমিকা রাখায় সহযোদ্ধা শাহ আলম, শহীদুল ও তাঁকে (পীরজাদা হোসেন আহমদ) জীবিত অথবা মৃত ধরিয়ে দিতে পারলে ১০ হাজার টাকা ঘোষণা করে পাকবাহিনী। পরবর্তীতে নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে প্রবেশ করেন। ত্রিপুরা হতে আসামের করিমগঞ্জ আসেন সিলেটের যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে। সেখানে অবিভক্ত সিলেট জেলা ছাত্রলীগের প্রতিষ্টাতা সভাপতি দেওয়ান নুরুল হোসেন চঞ্চল এবং একাত্তরের রনাঙ্গনে সিলেট অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতা আখতার আহমদের সংস্পর্শে এসে নিজেকে নিয়ে যান অনন্য উচ্চতায়।

১৯৪৩ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর সিলেটের মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণ ভাগের আরেঙ্গাবাদে জন্মগ্রহণ করেন পীরজাদা হোসেন আহমদ। বড়লেখায় সমাজসেবা ও রাজনীতিতে তাঁর পরিবারের রয়েছে উজ্জ্বল ইতিহাস। পিতা জমির উদ্দিন আহমদ এবং মাতা গুলজাহানারা বেগম আহমদ। দুই কন্যা পাঁচ পুত্রের গর্বিত জনক পীরজাদা হোসেন আহমদ নব্বইয়ের দশকে ইংল্যান্ডে পাড়ি জমান এবং কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েটে কর্মজীবন শুরু করেন। কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েট হতে অবসর নিয়ে বর্তমানে তিনি লেখালেখি ও সমাজসেবামূলক কাজে সক্রিয় রয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের স্মৃতিচারণ নিয়ে লেখা বই একাত্তরের বিজয়ফুল গণভবনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেন এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই গ্রন্থ রচনার জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা পীরজাদা হোসেন আহমদের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

ইংল্যান্ডের চ্যারিটি সংগঠন বড়লেখা ফাউন্ডেশন ইউকে (চ্যারিটি নং-1191593) প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন এবং তিনি প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে সংগঠন পরিচালনায় দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও প্রিজম ফাউন্ডেশন বড়লেখার একজন পরিচালক। প্রিজম ফাউন্ডেশন বড়লেখা লন্ডন বাংলা স্কুল নামে একটি স্কুল পরিচালনা করছে। নিজ উদ্যোগে প্রতিনিয়ত মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। বড়লেখায় একটি ডায়াবেটিস ও চক্ষু হাসপাতাল গড়ার লক্ষ্যে বড়লেখা ফাউন্ডেশন ইউকের উদ্যোগকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

দেশমাতৃকার প্রতি তাঁর গভীর টান সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘মা, মাতৃভাষা ও মাতৃভূমি এ তিনটি জিনিস আমার কাছে মহা মূল্যবান। মাতৃভূমির মাটি ও মানুষের প্রতি ভালোবাসা ধর্মপ্রাণ মানুষের স্বাভাবিক ও সহজাত প্রবৃত্তি। জীবন-জীবিকার প্রয়োজন ও কর্তব্যের টানে বিদেশে বসবাস করলেও জন্মভূমি সবসময় থাকে আমার অন্তরে। যুদ্ধ করে বিজয় এনেছি, যতদিন বেঁচে আছি ততদিন মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখতে কাজ করে যাব।’’

 

লড়াকুরা এমনই। দেশমাতৃকার তরে বীর মুক্তিযোদ্ধা পীরজাদা হোসেন আহমদের লড়াই এখনও চলমান। বয়সকে হার মানিয়ে দেশ কিংবা বিদেশ সবখানেই তিনি কর্মস্পৃহায় অনন্য, কর্মমুখরতায় সজীব।

Facebook Comments Box

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

লটারিতে ১ লাখ ডলার জিতে নিলেন জামি হকিন্স

সুইজারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: স্কলারশিপ এবং নানান সুবিধা

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের স্বপ্ন দেখছে পাকিস্তান

অভিবাসীদের আশ্রয় অধিকার বাতিলে আইন করছে পোল্যান্ড

কমলা হ্যারিসের পক্ষে প্রচারণায় বাংলাদেশি আমেরিকান কমিউনিটি

হাসপাতালে মাহাথির মোহাম্মদ

কমিউনিটির কল্যাণে কাজ করছেন রিয়েলেটর মুহিবুল হাসান চৌধুরী

পুতিনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখাকে বুদ্ধিমত্তার পরিচয় মনে করেন ট্রাম্প

মটর সিটি ক্যারাম টুর্নামেন্ট ২০২৪- সম্পন্ন

ভবানীপুর সমাজকল্যাণ পরিষদ-এর আত্মপ্রকাশ

১০

আগস্ট বিপ্লবের শহীদদের স্মরণে বিলেতে আলোচনা ও কবিতা পাঠ

১১

যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ড্রোন কিনছে ভারত

১২

আশাবাদী হওয়ার উপায়

১৩

ক্যান্সারের চিকিৎসা : সহজ ও কঠিন

১৪

ঢাবি শিক্ষক ছাড়া কি ভিসি হওয়া যায় না

১৫

অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন তিন মার্কিন অর্থনীতিবিদ

১৬

মিশিগানে তিন দিনের প্রচারণায় কমলা হ্যারিস

১৭

মিশিগানে বিশ্ব সিলেট সম্মেলন-২০২৫ আয়োজনের উদ্যোগ

১৮

কমলা হ্যারিস এবং টিম ওয়ালজের সমর্থনে হ্যামট্রামিকে অফিস উদ্বোধন

১৯

পেনসিলভানিয়ার লড়াইয়ে এগিয়ে কমলা

২০