মুহিবুল হাসান চৌধুরী। মিশিগানের একজন পরিচিত মুখ। তিনি একাধারে আইটি উদ্যোক্তা এবং রিয়েল এস্টেট কনসালটেন্ট। উভয় বিষয়ে তাঁর রয়েছে দক্ষতা, যোগ্যতা, প্রাজ্ঞতা এবং সামগ্রিক বিশেষ অবস্থান। তাঁর ব্যক্তিজীবনের বিভিন্ন বিষয়, রিয়েল এস্টেট ব্যবসার সার্বিক পরিবেশ-পরিস্থিতি গল্প-আড্ডায় উঠে এসেছে। বাংলা সংবাদ পত্রিকার পাঠকদের জন্য প্রদত্ত সাক্ষাৎকারটি নিম্নে তুলে ধরা হলো।
মুহিব: বাংলা সংবাদের সকল পাঠককে জানাই সালাম এবং শুভেচ্ছা। আমার নাম মুহিবুল হাসান চৌধুরী। তবে মিশিগানের বাঙালি কমিউনিটিতে আমাকে কেউ কেউ মুহিব আবার কেউ কেউ হাসান নামে চিনেন।
মুহিব: আমি আমেরিকার মিনেসোটার একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চারবছর মেয়াদী কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগ থেকে বিএসসি সম্পন্ন করেছি। এর পূর্বে মিশিগানের একটি কলেজ থেকে দুই বছরের এসোসিয়েট কোর্স সম্পন্ন করি।
মুহিব: আমার শৈশব অন্যান্যদের মতোই বাংলাদেশে কেটেছে। আমি চট্টগ্রামে বড় হয়েছি। আমার পৈত্রিক নিবাস সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজারে। আমাদের পরিবারের সবাই সেখানে বসবাস করেন।
মুহিব: আমেরিকায় কর্মজীবনে প্রথমে একটি ফার্স্ট ফুড রেস্টুরেন্টে ফুড প্রস্তুতকারক এবং সার্ভ করার কাজ করি। এরপর আমি বিভিন্ন অটো ইন্ড্রাস্ট্রিতে কাজ করি। একটি কোম্পানিতে মেশিন অপারেটর, লজিস্টিক ডিপার্টমেন্ট এবং কোয়ালিটি ডিপার্টমেন্টে কাজ করি। এরপর একটি কোম্পানিতে কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স বিভাগে যোগদান করি। এসময় আরেকটি কোম্পানির বিজনেস এনালিস্ট হিসেবেও কাজ করেছি। তাছাড়া ফ্রিল্যান্সার হিসেবে সফটওয়্যার ডেভেলপ থেকে শুরু করে ওয়েবসাইট ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপিং এর কাজ করি। পরে আমার নিজস্ব আইটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলি। এ ব্যবসার পাশাপাশি ২০২০ সালে আমি হোম ইন্সপেকশনের ওপর লাইসেন্স নিই। এসময় আমি হোম ইন্সপেকশনের মেকানিক্যাল, ইলেকট্রিক্যাল এবং ফাউন্ডেশনের অনেক বিষয় জানতে পারি। সেজন্য হোম ইন্সপেক্টর হিসেবে কাজ করা অনেক সহজ হয়ে পড়ে। এরপর ২০২১ সালের শেষের দিকে রিয়েল এস্টেটের লাইসেন্স নিয়ে আমি বাংলাদেশী মালিকানাধীন মিশিগানের বিগেস্ট ব্রোকার আমিন রিয়েলটিতে যোগদান করি।
মুহিব: পারিবারিক ঐতিহ্য অনুযায়ী আমি ব্যবসায় যোগদান করি। পূর্ব থেকেও আমার বাবার ব্যবসা ছিল, যা এখনো আছে। ব্যবসাটা আসলে একটি চ্যালেঞ্জিং পেশা।
মুহিব: ২০১৯ সালের রমজান মাসের পরবর্তী সময় থেকে নিজেকে একজন আইটি উদ্যোক্তা গড়ে তুলতে সচেষ্ট হই। এসময় সফটওয়্যার এবং ওয়েবসাইট তৈরির কাজ করি। এরপর তো ২০২১ সালে রিয়েল এস্টেটের লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসায় যোগ দিই।
মুহিব: মিশিগানে রিয়েল এস্টেট ব্যবসার অবস্থা গড়ে ভালো বলা যায়। এখানকার শিক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা-চিকিৎসার অনন্য সুযোগ রয়েছে। এছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থা কিংবা জবের অবস্থাও বেশ আশাব্যঞ্জক। এখানে অনেক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে মিশিগানের সার্বিক অবস্থা অন্যান্য স্টেটের তুলনায় বেশ ভালো।
মুহিব: আমি মনে করি, একটা মানুষের প্রথম প্রতিকূলতা হচ্ছে সে নিজেই। জীবনে লক্ষ্য-উদ্দেশ্য সম্পর্কে অবগত হয়ে পজিটিভিটি, যোগ্যতা, ধৈর্যশক্তি বা উপযুক্ত জ্ঞান নিয়ে সবকিছু মোকাবেলা করতে হবে।
মুহিব: আমি মনে করি, আমার জীবনে সবচেয়ে বড় পুরস্কার হচ্ছে মানুষের দোয়া। মানুষ যদি আমাকে বিশ্বাসযোগ্য মনে করে, এটাই আমার জন্য সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।
মুহিব: আমার এ পর্যন্ত আসতে পিতা-মাতা, স্ত্রী-সন্তান এবং বন্ধু-বান্ধব আমাকে অনুপ্রাণিত করেছেন।
মুহিব: জীবনে সবার কষ্ট এবং আনন্দের স্মৃতি আছে। আমারও আছে। আমি যখন অটো ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করি, সে সময় রমজান মাসে আমাকে অনেক কষ্টে দেড়মাইল হেঁটে হেঁটে বাসা যেতে হয়। এভাবেই নিজের কষ্টগুলোকে নিজেই মোকাবেলা করতে হয়েছে। আমি যেদিন গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করি, সেদিন আমার বেশ আনন্দ হয়েছিল।
মুহিব: আমি রাসুল (সা.)-কেই আমার জীবনের মূল অনুপ্রেরণা মনে করি। তিনি একটি সুন্দর আদর্শ পৃথিবীতে প্রচার করে গেছেন। তাঁর পুরো জীবনটিই আমার জন্য উৎসাহ-উদ্দীপনা এবং অনুপ্রেরণা।
মুহিব: একজন আইটি উদ্যোক্তা এবং রিয়েল এস্টেট কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করছি। ক্লায়েন্টকে সত্যিকার অর্থে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। তাদের আনন্দেই আমার সার্থকতা। এসব বিবেচনায় বেশ ভালো আছি।
মুহিব: সত্যিকার অর্থে যারা বিশ্বাসযোগ্যতা, দক্ষতা, যোগ্যতা, সততার ভিত্তিতে কাজ করতে পারবেন, তাদেরই এ পথে আসা উচিত।
মুহিব: এ পেশায় আমার ভবিষ্যত পরিকল্পনা হচ্ছে একজন বিল্ডার হওয়া। আপনাদের সবার দোয়া চাই।
মুহিব: আপনাকেও ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন