টেক্সাসে দুই ব্যবসায়ীকে চীনে মার্কিন এআই প্রযুক্তি পাঠানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার। কঠোর প্রযুক্তিগত বিধিনিষেধ থাকার পরও যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার এআই প্রতিযোগিতা এখনও তুঙ্গে। নিষেধাজ্ঞার কারণে মার্কিন বিভিন্ন কোম্পানিকে চীনের কাছে গুরুত্বপূর্ণ এআই অবকাঠামো সরবরাহ করতে বাধা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, বিশেষ করে মার্কিন চিপ জায়ান্ট এনভিডিয়ার বিভিন্ন জিপিইউ চিপ। এসব চিপ জেনারেটিভ এআই অগ্রগতির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে বিবেচিত হয়, যা চীনা কোম্পানির কাছে বিক্রি কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
প্রযুুক্তি বিষয়ক সাইট স্ল্যাশগিয়ার লিখেছে, নিষেধাজ্ঞার পরও অবৈধ উপায়ে এনভিডিয়ার এসব চিপ চীনে পৌঁছেছে। অবশেষে এ ধরনের বাণিজ্য বন্ধে কিছুটা সাফল্যের স্বাদ পেয়েছে ফেডারেল সরকার। টেক্সাসে দুই ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তারের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ। এআই হার্ডওয়্যার সরবরাহের চেষ্টা করে মার্কিন রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ ও চোরাচালান আইন লঙ্ঘন করেছেন তারা। ‘হাও গ্লোবাল এলএলসি’ নামের এক হিউস্টনভিত্তিক কোম্পানির মালিক নিজের দোষ স্বীকার করে নিয়েছেন। তাদের কাছ থেকে ৫ কোটি ডলারের নগদ ও এনভিডিয়ার এআই হার্ডওয়্যার উদ্ধার করেছে মার্কিন বিচার বিভাগ।
তবে এ ঘটনায় প্রথম নয়, যেখানে এনভিডিয়ার হার্ডওয়্যার অবৈধভাবে চীনের এআই অগ্রগতির সঙ্গে যোগ হয়ে আলোচনায় এসেছে। এর কয়েক সপ্তাহ আগেই জানা গিয়েছে, চিপ রপ্তানি নিয়ন্ত্রণে থাকার পরও প্রায় ১০০ কোটি ডলারের এনভিডিয়া চিপ অবৈধভাবে চীনে ঢুকেছে। চীনে সুপারকম্পিউটার উন্নয়নে ব্যবহৃত হতে পারে এমন চিপের ওপর ২০২২ সাল থেকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বছরের এপ্রিলে এনভিডিয়া এইচ২০ এআই চিপ বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছিল দেশটি।
টেক্সাসের বাসিন্দা আলান হাও হসুর বিরুদ্ধে ফেডারেল সরকার অভিযোগ করেছে, প্রায় ১৬ কোটি ডলারের মূল্যের ‘এনভিডিয়া এইচ১০০’ ও ‘এইচ২০০ জিপিইউ’ নামের চিপ ‘জেনেশুনে রপ্তানি ও রপ্তানির চেষ্টা’ করেছেন তিনি। মার্কিন বিচার বিভাগের জনসংযোগ অফিস বলেছে, ‘এসব জিপিইউ বেসামরিক ও সামরিক উভয় ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়’। হসু ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের মে মাসের মধ্যে জাল কাগজপত্র ও ভুয়া প্রতিবেদন ব্যবহার করে গুরুত্বপূর্ণ এআই হার্ডওয়্যার পাচারের অভিযোগ করেছে সংস্থাটি।
সম্প্রতি টেক্সাস অভিযানেই নিউ ইয়র্কভিত্তিক এক প্রযুক্তি কোম্পানির মালিক ফানিউ ‘টম গং’ ও চীনা কোম্পানিটির মার্কিন সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী বেনলিন ইয়ানকে গ্রেপ্তার করেছে আইনপ্রয়োগকারী বিভিন্ন সংস্থা। অভিযোগ রয়েছে, হংকংভিত্তিক এক লজিস্টিক কোম্পানির সঙ্গে কাজ এবং মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে এনভিডিয়ার চিপ কিনেছেন তারা। হসুর কোম্পানি চীনের সঙ্গে সম্পর্কিত ৫ কোটি ডলারের অর্থ পাঠিয়েছে। তাদের ১০ বছরের কারাদণ্ড ও অবৈধ বাণিজ্য থেকে পাওয়া মোট লাভের চেয়ে বেশি জরিমানা হতে পারে।
সূত্র: রয়টার্স
মন্তব্য করুন