কামাল হোসেন
২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩:০০ অপরাহ্ন
অনলাইন সংস্করণ

মিশিগানে ভ্রমণকারীদের জন্য ১০টি সেরা গন্তব্য

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলের অঙ্গরাজ্য মিশিগানকে বলা হয় “গ্রেট লেকস স্টেট।” প্রকৃতির অপার সৌর্ন্দয্য, ঐতিহাসিক নিদর্শন, আধুনিক নগরজীবন এবং বিনোদনের অফুরন্ত ভান্ডারে সমৃদ্ধ এই রাজ্য ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য যেন এক স্বপ্নরাজ্য। হোক তা ডেট্রয়েটের সংগীত ও গাড়ির ইতিহাস, কিংবা লেক মিশিগানের তীরে অনিন্দ্যসুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য-সবখানেই রয়েছে ভিন্ন স্বাদ ও অভিজ্ঞতা। প্রতি বছর হাজারো পর্যটক এখানে আসেন বিশেষভাবে সাজানো পার্ক, ঐতিহাসিক জাদুঘর, দ্বীপ, চিড়িয়াখানা এবং লেকসাইড রিসোর্টে অবকাশ যাপনের জন্য। মিশিগান ভ্রমণে যারা আসতে চান, তাদের জন্য ঘুরে দেখার মতো কিছু জনপ্রিয় গন্তব্যস্থলের বিস্তারিত রয়েছে, যা রাজ্যের সৌর্ন্দয্য ও বৈচিত্র্যকে তুলে ধরে।

 

 


গ্রীষ্মকালে ভ্রমণপ্রিয়দের জন্য ম্যাকিন্যাক দ্বীপের আকর্ষণ

মিশিগানের জনপ্রিয় গ্রীষ্মকালীন পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে অন্যতম ম্যাকিন্যাক দ্বীপ, যা হিউরন হ্রদের তীরে অবস্থিত এবং স্ট্রেইটস অব ম্যাকিন্যাকের সংযোগস্থলে গড়ে উঠেছে। দ্বীপের ৮০ শতাংশেরও বেশি এলাকা একটি রাষ্ট্রীয় পার্ক হিসেবে সংরক্ষিত, যেখানে উচ্চ পাহাড়, গিরিখাত, প্রাকৃতিক সেতু, গুহা ও রক ফর্মেশনসহ দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক দৃশ্যমান।
ম্যাকিন্যাক দ্বীপের প্রধান আকর্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে লাইভ হিস্ট্রি ইন্টারপ্রেটার বা পোশাকধারী ইতিহাসবক্তাদের মাধ্যমে প্রদর্শিত ন্যাশনাল হিস্টরিক ল্যান্ডমার্ক। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কলোনিয়াল মিশিলিম্যাকিন্যাক, ফোর্ট ম্যাকিন্যাক, এবং হিস্টরিক মিল ক্রিক ডিসকভারি পার্ক। ডাউনটাউন এলাকাটি এখনও তার ঐতিহাসিক স্বাদ বজায় রেখেছে, যা দর্শনার্থীদের অতীতের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে সহায়তা করে।

 

মিশিগানের লেকসাইড পর্যটন ডিউনস, দ্বীপ ও দর্শনীয় স্থান

মিশিগানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে অন্যতম গৌরব, স্লিপিং বিয়ার ডিউনস ন্যাশনাল লেকশোর ও লেক মিশিগান পর্যটকদের জন্য এক অপরিসীম অভিজ্ঞতার সুযোগ করে দিচ্ছে। লেক মিশিগান, যা গ্রেট লেকসের মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম, সম্পূর্ণভাবে মার্কিন মাটির সীমানা জুড়ে অবস্থিত একমাত্র লেক। এই কারণে মিশিগান রাজ্যের সীমানা পৃথিবীর অন্যান্য ৫০টি রাজ্যের মধ্যে আলাস্কার পর দ্বিতীয় দীর্ঘতম তীররেখা হিসেবে পরিচিত।
এই স্টেট পার্কটি দর্শনার্থীদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয়, এখানে বিভিন্ন ধরনের হাইকিং ট্রেইল এবং ৭.৫ মাইল দীর্ঘ Pierce Stocking Scenic Drive উপভোগ করা যায়। লেকশোরের অন্যান্য চমৎকার ডিউনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ওয়্যারেনের Warren Dunes-এবং Muskegon-Gi P.J. Hoffmaster State Park.

 

ডেট্রয়েট আর্ট ইনস্টিটিউটে বিশ্বের শিল্পকলার জাদুঘর

মিশিগানের ডেট্রয়েট শহরে অবস্থিত ডেট্রয়েট আর্ট ইনস্টিটিউট (Detroit Institute of Arts) শিল্পপ্রেমীদের জন্য এক অনন্য গন্তব্য। বক্স-আর্টস স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত এই জাদুঘরটি মানব ইতিহাসের সৃষ্টিশীল কাজের বিস্তৃত সংগ্রহের জন্য পরিচিত। প্রায় ৬৫,০০০-এরও বেশি শিল্পকর্ম এবং ১০০-এর বেশি প্রদর্শনী কক্ষে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এবং সংস্কৃতির শিল্পকর্ম এখানে সংরক্ষিত আছে।
বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে রয়েছে ডায়েগো রিভেরার “ডেট্রয়েট ইন্ডাস্ট্রি মুরাল”, যা জাদুঘরের প্রধান সংগ্রহের একটি অঙ্গ এবং শহরের শিল্প ও ঐতিহ্যের উপর একটি শক্তিশালী শিল্পনির্মাণ।
পরিদর্শকরা জাদুঘরের আশেপাশে অবস্থিত ডেট্রয়েট পাবলিক লাইব্রেরির মনোরম স্থাপত্যও উপভোগ করতে পারেন।
এছাড়াও, উডওয়ার্ড অ্যাভিনিউ ধরে হেঁটে গেলে ডেট্রয়েট হিস্টোরিক্যাল মিউজিয়ামে পৌঁছানো যায়, যা শহরের শিল্প ও শিল্পনগরীর ইতিহাস এবং প্রখ্যাত মোটাউন সঙ্গীতের উদ্ভবের গল্প জানায়।

 

মিশিগানের পিকচার্ড রকস ন্যাশনাল সীশোর

মিশিগানের লেক সুপিরিয়রের দক্ষিণ তীরে অবস্থিত পিকচার্ড রকস ন্যাশনাল সীশোর তার অদ্বিতীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে দর্শনার্থীদের আকর্ষণের কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়েছে। এই স্থানটির নামকরণ মূলত এখানে পাওয়া তামা, লোহা এবং ম্যাঙ্গানিজ অক্সাইড সমৃদ্ধ রঙিন চুনাপাথরের জন্য। এখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্যপট একদিকে বালুকাময় টিলা, খাড়া পাহাড়ি চূড়া, নীরব সমুদ্র সৈকত এবং পাথুরে তীররেখা নিয়ে গঠিত, অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ অংশটি বনজ আচ্ছাদিত, যেখানে অভ্যন্তরীণ হ্রদ ও নদী রয়েছে।
পর্যটকরা এখানে সাধারণত প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটাতে হাইকিং, ক্যাম্পিং এবং নৌভ্রমণের মতো কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন। বিশেষ করে নৌকাভ্রমণ করলে পর্যটকরা রঙিন চুনাপাথর, সমুদ্রগুহা এবং প্রাকৃতিক আর্কগুলো কাছ থেকে দেখতে পান, যা এই ন্যাশনাল সীশোরের অন্যতম

 

পরিবার ও শিল্পপ্রেমীদের জন্য আদর্শ গন্তব্য

গ্র্যান্ড র‌্যাপিডস, মিশিগানে অবস্থিত Frederik Meijer Gardens & Sculpture Park হলো একটি অনন্য স্থান যেখানে শিল্প এবং প্রকৃতির সমন্বয় দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। এই উদ্যানের বহিরঙ্গন ক্ষেত্রগুলোতে রয়েছে প্রথাগত গাছপালা, শিশুদের জন্য বিশেষভাবে নির্মিত গার্ডেন যেখানে তারা বিভিন্ন অদ্বিতীয় উদ্ভিদ নিয়ে খেলা করতে পারে, একটি “বাটারফ্লাই মেজ,” এবং শান্তিপূর্ণ জাপানি উদ্যান যেখানে দুইটি জলপ্রপাত দর্শককে মনোরম অনুভূতি প্রদান করে।
উদ্যানের মধ্যে ১৮৮০-এর দশকের একটি খামারবাড়ি রয়েছে, যা লেনা মেইজারের প্রথম গৃহের প্রতিলিপি এবং এতে Farm Garden অন্তর্ভুক্ত। লেনা মেইজার কনজারভেটরি হলো পাঁচ তলা বিশিষ্ট একটি ট্রপিক্যাল পরিবেশ, যেখানে বহু বিরল ও বিদেশী উদ্ভিদ সংরক্ষিত। মার্চ এবং এপ্রিল মাসে দর্শকরা মোনার্ক প্রজাপতিদের চমকপ্রদ রূপান্তরের প্রক্রিয়া সরাসরি উপভোগ করতে পারেন।
উদ্যানের অভ্যন্তরীণ এবং বহিরঙ্গন উভয় ক্ষেত্রেই ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে, যা শিল্পপ্রেমীদের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা প্রদান করে।

 

ডিয়ারবর্নে হেনরি ফোর্ড ইতিহাস থেকে আধুনিকতার যাত্রা

আমেরিকার উদ্ভাবন ও প্রযুক্তির ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হলো “দ্য হেনরি ফোর্ড।’’ এটি একটি বিস্তৃত কমপ্লেক্স, যেখানে তিনটি ভিন্ন আকর্ষণ দর্শকদের সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা প্রদান করে। এই স্থানে আগমন করলে প্রথমেই চোখে পড়ে গ্রিনফিল্ড ভিলেজ, যা ১৯ শতকের জীবনযাত্রার একটি পুনর্নির্মিত চিত্র। এখানে দর্শকরা ঐতিহাসিক খামার, ১৮৩০-এর দশকের খাদ্য পরিবেশনকারী রেস্টুরেন্ট, এবং স্টিম-চালিত লোকোমোটিভে যাত্রা উপভোগ করতে পারেন। এছাড়াও মডেল টি গাড়িতে ভ্রমণও বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে বিবেচিত।
হেনরি ফোর্ড মিউজিয়াম অব আমেরিকান ইনোভেশন উদ্ভাবক ও চিন্তাবিদদের কাহিনী বর্ণনা করে, যারা আজকের বিশ্বের নকশা ও প্রযুক্তি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। রাইট ভাইরাসের উড়ানের স্বপ্ন থেকে রোজ পার্কসের সামাজিক পরিবর্তনের জন্য দৃঢ় প্রত্যয় পর্যন্ত, সবকিছুই এখানে ফুটে উঠেছে। হেনরি ফোর্ড ভ্রমণ শুধু বিনোদন নয়, বরং শিক্ষণীয় ও অনুপ্রেরণাদায়ক অভিজ্ঞতার এক অনন্য। সমাহার

 

আইল রয়েল ন্যাশনাল পার্ক এক অনন্য প্রাকৃতিক অভিজ্ঞতা

যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান রাজ্যের লেক সুপিরিয়রে অবস্থিত আইল রয়েল ন্যাশনাল পার্ক একটি অনন্য প্রাকৃতিক অভিজ্ঞতা প্রদান করে। ৪৩২ বর্গমাইল আয়তনের এই দ্বীপটি বরফযুগের গ্লেসিয়ারে গঠিত এবং এখানে রয়েছে ঘন বন, ঝর্ণা, হ্রদ, এবং বিভিন্ন বন্যপ্রাণী। আইল রয়েল ন্যাশনাল পার্কের বন্যপ্রাণীর মধ্যে রয়েছে লুপস, মুস, ফক্স, ওটারের মতো প্রাণী। এই পার্কটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বন্যপ্রাণী পর্যবেক্ষণের জন্য বিখ্যাত।
আইল রয়েল ন্যাশনাল পার্কে যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ, তবে পার্কে হাইকিং, ক্যানোইং, কায়াকিং, এবং ডাইভিংয়ের মতো কার্যক্রমের সুযোগ রয়েছে। এই পার্কটি প্রকৃতিপ্রেমী ও অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের জন্য একটি আদর্শ গন্তব্য।

 

ডেট্রয়েট চিড়িয়াখানায় বিশ্বজুড়ে প্রাণীর সমাহার

মিশিগানের রয়্যাল ওকে অবস্থিত ডেট্রয়েট চিড়িয়াখানা প্রাণীপ্রেমীদের জন্য এক অনন্য আকর্ষণ।

পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের প্রাণীর সমাহারে সাজানো এই চিড়িয়াখানা দর্শনার্থীদের জন্য রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা এনে দেয়। আফ্রিকার ঘন বনভূমি থেকে শুরু করে বিস্তৃত তৃণভূমি পর্যন্ত নানা পরিবেশে এখানে বসবাস করছে অসংখ্য প্রাণী। আরডভার্ক থেকে শুরু করে জেব্রা পর্যন্ত নানা প্রজাতির প্রাণী রয়েছে এখানে। সিংহ, জিরাফ, লেমুরসহ বিভিন্ন প্রাইমেট দর্শকদের কাছে বিশেষভাবে জনপ্রিয়।
চিড়িয়াখানার অন্যতম আকর্ষণ ‘আর্কটিক রিং অব লাইফ’, যা বিশ্বের বৃহত্তম মেরুভালুকের আবাসস্থলগুলোর মধ্যে একটি। এখানে রয়েছে বিশেষ আন্ডারওয়াটার ভিউয়িং টানেল, যা দিয়ে দর্শনার্থীরা পানির নিচে সাঁতার কাটতে থাকা মেরুভালুককে কাছ থেকে দেখতে পারেন।
প্রাণীপ্রেমীদের জন্য এটি নিঃসন্দেহে এক অবিস্মরণীয় ভ্রমণ গন্তব্য।

 

মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় অ্যান আরবার

অ্যান আরবারে অবস্থিত মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় প্রায় ২,৮০০ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। এর ভেতরে বেশ কিছু আকর্ষণীয় পুরনো গথিক স্থাপনা রয়েছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ল’ কোয়াড্র্যাঙ্গল, পারফর্মিং আর্টসের জন্য পাওয়ার সেন্টার এবং ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম। ক্যাম্পাসের অন্যতম আকর্ষণ হলো কেলসি মিউজিয়াম অব আর্কিওলজি, যেখানে ভূমধ্যসাগরীয় সভ্যতাগুলোর সমৃদ্ধ সংগ্রহ রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্ট মিউজিয়াম এবং ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরেও অ্যান আরবার শহরে দেখার মতো ও করার মতো অনেক কিছু রয়েছে। এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো ম্যাথাই বোটানিক্যাল গার্ডেনস, যা ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থিত

 

বেল আইল পার্ক, ডেট্রয়েট

ডেট্রয়েট নদীর বুকে অবস্থিত বেল আইল একটি বিস্তৃত পার্ক, যেখানে দর্শনার্থীদের জন্য নানা আকর্ষণীয় স্থান রয়েছে। দ্বীপে প্রবেশের টিকিটের মাধ্যমেই সবগুলো আকর্ষণীয় স্থানে ভ্রমণ করা যায়।
পরিবারের প্রিয় ভ্রমণস্থলগুলোর মধ্যে রয়েছে বেল আইল অ্যাকুরিয়াম, যা যুক্তরাষ্ট্রের প্রাচীনতম অ্যাকুরিয়াম। ১৯০৪ সালে নির্মিত ঐতিহাসিক ভবনটিতে অবস্থিত এই অ্যাকুরিয়ামের ছাদ অপূর্ব সবুজ রঙের অপালাইট গম্বুজ আকারে সাজানো। এখানে পাফারফিশ, ক্লাউন ফিশ, কচ্ছপ, সী-হর্স এবং এমনকি বিষাক্ত ব্যাঙসহ নানা প্রজাতির জলজ প্রাণী রয়েছে।
আরেকটি জনপ্রিয় আকর্ষণ হলো আনা স্ক্রিপস হুইটকম কনজারভেটরি। ১৩ একর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত এই গ্রীনহাউসের পাশে রয়েছে লিলু পুকুর এবং নকশা করা উদ্যান। এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রাচীনতম কনজারভেটরিগুলোর একটি।

 

মিশিগান সিটির প্রাচীন দুর্গে অতীতের জীবন্ত ইতিহাস

মিশিগানের ম্যাকিনাক সিটির ঐতিহাসিক নিদর্শন কলোনিয়াল মিশিলিম্যাকিনাক দর্শনার্থীদের সামনে ১৮শ শতকের জীবন্ত ইতিহাস উপস্থাপন করছে। একসময় এটি ছিল ফরাসি পশম বাণিজ্যের গ্রাম ও সামরিক ঘাঁটি, যা ১৭১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং ১৭৮১ সালে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে প্রায় সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়।
বর্তমানে এ স্থানে ১৪টি পুনর্নির্মিত ও ঐতিহ্যবাহী সাজে সজ্জিত ভবন রয়েছে। এর মধ্যে একটি ভবন মিশিগানের প্রাচীনতম স্থাপনা হিসেবে স্বীকৃত। পুরো এলাকা এখন একটি লিভিং হিস্ট্রি মিউজিয়াম, যেখানে দর্শনার্থীরা অতীতের জীবনধারার সরাসরি অভিজ্ঞতা নিতে পারেন।
জাদুঘরে কর্মরত পোশাক পরিহিত অভিনয়শিল্পীরা ১৭৭৫ সালের মতো কৃষিকাজ, রান্না, অস্ত্রচালনা ও সামরিক কুচকাওয়াজের কাজ প্রদর্শন করেন। এর মধ্যে বিশেষ আকর্ষণ হলো সোলজার্স ব্যারাকস, যেখানে অঞ্চলের ইতিহাস নিয়ে প্রদর্শনী রয়েছে; পোস্ট হাসপাতাল, যেখানে দুর্গ পরিচালনার সময়কার চিকিৎসা ব্যবস্থা তুলে ধরা হয়েছে; এবং পোস্ট গার্ডহাউস, যেখানে সে সময়ের সামরিক বিচার ব্যবস্থা ব্যাখ্যা করা হয়।
দর্শনার্থীরা চাইলে মুক্তভাবে ঘুরে দেখতে পারেন অথবা গাইডেড ট্যুরে অংশ নিতে পারেন। শিশুদের জন্যও রয়েছে বিশেষ বিনোদন ও শিক্ষা কার্যক্রম, যেখানে তারা ১৮শ শতকের জীবনযাত্রা সম্পর্কে জানতে পারে।

 

 

Facebook Comments Box

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমেরিকার ভিসা নীতিতে পরিবর্তন: ১৯ দেশের অভিবাসন স্থগিত, বাংলাদেশ নিরাপদ

বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ভর্তিতে সীমাবদ্ধতা আরোপ করছে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো

মধ্যরাতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসছে, হেলিকপ্টারে বিমানবন্দরে যাবেন খালেদা জিয়া

পরিণাম

বেগম জিয়ার চিকিৎসায় চীনের চার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ঢাকায়

শুল্ক ও সংঘবদ্ধ অপরাধ নিয়ে ট্রাম্প-লুলার আলোচনা

ফুসফুসের ক্যানসার নিয়ে প্রচলিত ভুল ধারণাই বাড়াচ্ছে ঝুঁকি

মোবাইল ফোন আটকের জের ধরে প্রধান শিক্ষককে হত্যার চেষ্টা, প্রাক্তন ছাত্র গ্রেফতার

বড়লেখায় পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মাঠকর্মীদের অবস্থান ধর্মঘট ও সমাবেশ

আর্থিক সংকটে জাতিসংঘ: কর্মী ছাঁটাই ও বাজেট কমানোর ঘোষণা

১০

ভিএআর ব্যবস্থায় বড় সংস্কার- ২০২৬ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে ফিফার নতুন উদ্যোগ

১১

শারীরিক অবস্থার উন্নতি নেই, খালেদা জিয়াকে নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ

১২

হাকালুকির ‘হাওরখাল বিল’ প্রকাশ্যে ১ কোটি ৯৪ লাখ টাকায় নিলাম সম্পন্ন

১৩

এবার প্রকাশিত হলো সিলেটের সিএনজি ভাড়ার নতুন প্রস্তাবিত তালিকা

১৪

নিসচা’র ৩২ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বড়লেখায় বর্ণাঢ্য র‍্যালি ও সমাবেশ

১৫

দেশের ৫২৭ থানায় নতুন ওসি—লটারির ফলাফলে চূড়ান্ত

১৬

এইচআইভি প্রতিরোধে আফ্রিকার তিন দেশে শুরু হলো টিকা প্রয়োগ

১৭

হাইওয়েতে বসছে ১৪০০ ক্যামেরা, মোবাইলে যাবে ডিজিটাল জরিমানা

১৮

মার্কিন চাপের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বৈশ্বিক জোটে ভরসা ভেনেজুয়েলার

১৯

মায়ানমারের নাগরিকদের ‘অস্থায়ী অভিবাসন সুবিধা’ বাতিল করছে যুক্তরাষ্ট্র

২০