যুক্তরাষ্ট্রের চলচ্চিত্র জগতের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান হলিউডে ধর্মঘট চলছে। এই ধর্মঘটে চিত্রনাট্যকারদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন অভিনয়শিল্পীরাও।
এর ফলে সিনেমাগুলোর নির্মাণকাজ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ধর্মঘটের নেপথ্যের ঘটনা
অর্জিত মুনাফা থেকে ন্যায্য পাওনা, ভালো কর্মপরিবেশের দাবিতেই এই ধর্মঘট শুরু করেছে অভিনয়শিল্পীদের সংগঠন দ্যা স্ক্রিন অ্যাক্টর গিল্ড বা এসএজি। এসএজির এই ধর্মঘট লস এঞ্জেলস সময়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে শুরু হয়। পরদিন ক্যালিফোর্নিয়ায় নেটফ্লিক্স সদরদপ্তর ছাড়াও প্যারামাউন্ট, ওয়ার্নার ব্রস ও ডিজনির সামনে শিল্পী-কুশলীরা জড়ো হয়।
শিল্পীদের ইউনিয়ন বলেছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং কম্পিউটার জেনারেটেড চেহারা বা কণ্ঠ যেন শিল্পীদের জায়গায় ব্যবহার না করা হয়। ধর্মঘটের বিষয়ে ইউনিয়ন যে ঘোষণা দিয়েছে তাতে দেখা যায়, অভিনয়শিল্পী ছাড়াও গান, নৃত্য, স্ট্যান্ট পারফরমার এবং পাপেট বা মোশন পিকচার নিয়ে যারা কাজ করেন তারাও এর আওতায় আছেন।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগের বিষয়ে এএমপিটিপি বলেছে, তারা এ নিয়ে একটি ‘যুগান্তকারী প্রস্তাবে’ একমত হয়েছে—যা অভিনয়শিল্পীদের ডিজিটাল প্রতিলিপি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সুরক্ষা দেবে এবং কোনো শিল্পীর ডিজিটাল রেপ্লিকা ব্যবহার করা হলে তার সম্মতি নিতে হবে। তবে এসএজির পক্ষে থাকা প্রধান আলোচক ডানকান ক্রাবট্রি-আয়ারল্যান্ড বলেছেন, এ প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয়।
অনলাইন স্ট্রিমিং সার্ভিসগুলোর বিষয়ে এসএজির দাবি ছিল—চলচ্চিত্র বা অনুষ্ঠান পুনঃপ্রচার হলে সেজন্য শিল্পীদের অর্থ দিতে হবে। ওদিকে রাইটার্স গিল্ড অব আমেরিকা আরেকটি ধর্মঘট চালিয়ে যাচ্ছে। এ সংগঠনের প্রায় সাড়ে এগারো হাজার সদস্য আছে। তারা পারিশ্রমিক বৃদ্ধি ও ভালো কর্মপরিবেশের দাবিতে গত ২ মে থেকেই এই ধর্মঘটে আছে।
সমাধান কোন পথে
ধর্মঘট নিরসনের উপায় খুঁজতে ভবিষ্যতে অভিনয়শিল্পীদের সমিতি এসএজির সঙ্গে অভিনয়শিল্পীদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন ও হলিউড স্টুডিওগুলোর মধ্যে বৈঠক হবে। ঐ ধর্মঘট থেকে সংকটের সমাধান খোঁজার চেষ্টা হবে সব পক্ষ থেকে।
লেখক এবং শিল্পীদের একযোগে দুটি ধর্মঘট ১৯৬০ সালের পর এই প্রথম। তখন এসএজির নেতৃত্বে ছিলেন অভিনেতা রোনাল্ড রিগ্যান, যিনি পরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। সে সময় লেখকরা কাজ বন্ধ রেখেছিলেন ২১ সপ্তাহ আর অভিনেতারা ছয় সপ্তাহ তাদের কাজ থেকে বিরতি নিয়েছিলেন।
আর অভিনয়শিল্পীরা সর্বশেষ ধর্মঘট করেছিলেন ১৯৮০ সালে। সেবার ১০ সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয় ঐ কর্মবিরতি। ঐ ধর্মঘটে ৩৭ কোটি ডলারের বেশি আর্থিক ক্ষতি হয়েছিল। তবে এবারের সমস্যা দীর্ঘায়িত হতে পারে। কারণ প্রভাবশালী অভিনেতারা ‘এসএজি-এএফটিআরএ’কে দাবি আদায়ে কঠোর হতে চাপে রেখেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে আরও পড়তে এখানে ক্লিক করুন
মন্তব্য করুন