দাবানলে জ্বলছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেস শহর। ব্যস্ত সময় পার করছেন অগ্নিনির্বাপণকর্মীরা। প্রায় এক সপ্তাহ হতে চললেও দাবানলের গতি কমার লক্ষণ নেই। এর মধ্যেই শহরটির ঘরবাড়ি, সড়ক আর গাড়ি লাল-গোলাপি গুঁড়ায় ঢাকা পড়েছে। এটা কিসের গুঁড়া? আর এর মাধ্যমে কীভাবে দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনা যায়? জানা গেছে, এ ধরনের গুঁড়া অগ্নিপ্রতিরোধক। দাবানলের বিস্তার ঠেকাতে বিশাল এলাকাজুড়ে আকাশ থেকে এই রঙিন গুঁড়া ছিটানো হয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, গত সপ্তাহে লস অ্যাঞ্জেলেসে হাজারো গ্যালন লাল-গোলাপি গুঁড়া উড়োজাহাজ থেকে ছিটানো হয়েছে।
উপাদানটির নাম ফস-চেক। পেরিমিটার নামের একটি কোম্পানি এটা বিক্রি করে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ১৯৬৩ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ফস-চেকের ব্যবহার হয়ে আসছে। ক্যালিফোর্নিয়ার বন ও অগ্নিনিরাপত্তা বিভাগও দীর্ঘদিন ধরে আগুন নেভানোর প্রধান উপাদান হিসেবে এটা ব্যবহার করছে। বার্তা সংস্থা এপি ২০২২ সালে এক প্রতিবেদনে বলেছিল, বিশ্বে আগুন নেভানোর কাজে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত উপাদানগুলোর একটি এই ফস-চেক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বেশ কিছু ছবিতে গাড়ি ও রাস্তাঘাটে গোলাপি রঙের গুঁড়ার আস্তর পড়ে থাকতে দেখা গেছে। পেরিমিটারের পক্ষ থেকে বাসিন্দাদের উদ্দেশে এই গুঁড়া পরিষ্কারের উপায় বাতলে দেওয়া হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এই গুঁড়া যত শুকিয়ে যাবে, পুরোপুরি পরিষ্কার করা তত কঠিন হতে পারে। ছোট কোনো জায়গা থেকে গরম পানি ও অল্প ডিটারজেন্ট ব্যবহার করে এটা উঠিয়ে ফেলা যাবে। আর পৃষ্ঠটি বড় হলে পানির উচ্চচাপ ব্যবহার করে পরিষ্কার করতে হবে। ফস-চেকে রঙের ব্যবহার সম্পর্কে বলতে গিয়ে পেরিমিটার জানায়, এর লাল-গোলাপি রং বৈমানিক ও অগ্নিনির্বাপণকর্মী উভয়ের জন্য দৃশ্যমান থাকে। সহজে তাঁরা এটা দেখতে পান। যেসব এলাকায় আগুন লাগার ঝুঁকি রয়েছে, সেখানে আগুন ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধে এটা ব্যবহার করা হয়। তবে ফস-চেকের ব্যবহার নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। সমালোচকদের মতে, এটা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। এতে থাকা রাসায়নিক উপাদান কার্যকর নয়। জলাশয়ের মাছ মেরে ফেলে।
যুক্তরাষ্ট্রের বন পরিষেবা জলপথ ও বিপন্ন প্রজাতির আবাসস্থলের মতো পরিবেশগত সংবেদনশীল এলাকায় আগুন নেভানোর কাজে ব্যবহৃত ফস-চেকের ব্যবহার বাধ্যতামূলকভাবে নিষিদ্ধ করেছে। তবে যখন মানুষের জীবন কিংবা জননিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হলে এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে না।
মন্তব্য করুন