ইউক্রেনের ওপর কয়েক সপ্তাহের মধ্যে রাশিয়া সবচেয়ে বড় বোমাবর্ষণের অংশ হিসেবে ৫৭৪টি ড্রোন ও ৪০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা এ কথা জানিয়েছেন। ইউক্রেনের বিমানবাহিনী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রাতে রাশিয়া থেকে ছোড়া ৬১৪টি ড্রোন ও অন্যান্য ক্ষেপণাস্ত্র গণনা করেছে এবং বলেছে, এর মধ্যে ৫৭৭টি রোধ করা হয়েছে। এটি জুলাই মাসের পর আকাশপথে সর্ববৃহৎ হামলা।
যদিও রাশিয়ার হামলা সাধারণত পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তবর্তী এলাকায় বেশি হয়, তবে সর্বশেষ হামলা পশ্চিমাঞ্চলকেও আঘাত করেছে। ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রেই সিবিহা বলেছেন, হাইপারসনিক, ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রগুলো রাতের বোমাবর্ষণে ব্যবহৃত হয়েছে। পাশাপাশি ইউক্রেনের বিমানবাহিনী বলেছে, অনেক হামলা পশ্চিম রাশিয়া ও কৃষ্ণ সাগর থেকে এসেছে, আর একটি ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়ার দখল করা ক্রিমিয়া থেকে এসেছে।
পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর লভিভে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় একজন নিহত ও আরো তিনজন আহত হয়েছে।
এ ছাড়া আবাসিক বাড়ি, নার্সারিসহ ২০টির বেশি বেসামরিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়ার সীমানার কাছাকাছি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ট্রান্সকারপাতিয়ায় ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র একটি মার্কিন ইলেকট্রনিকস কম্পানিকে আঘাত করলে ১৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কিয়েভ ‘নিরপেক্ষ ইউরোপে’ দেখা করতে প্রস্তুত। তিনি সুইজারল্যান্ড বা অস্ট্রিয়ার নাম প্রস্তাব করেছেন, তবে ইস্তাম্বুলের বিরোধিতা করেননি। জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি ‘যেকোনো ফরম্যাটে’ পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে ইচ্ছুক, যদিও তিনি বুদাপেস্টে আলোচনার ধারণা নস্যাৎ করে দিয়েছেন। তার মতে, এটি ‘আজকের দিনে সহজ নয়’।
যখন ট্রাম্প আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে দেখা করেন এবং তারপর সোমবার হোয়াইট হাউসে জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন, তখন দুই নেতার সরাসরি আলোচনার সম্ভাবনা সামনে আসে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রথমে তৃপক্ষীয় আলোচনা প্রস্তাব করেছিলেন, যেখানে তিনি, পুতিন ও জেলেনস্কি থাকবেন, কিন্তু পরে বলেছেন, তিনি অংশ না-ও নিতে পারেন। তিনি বলেন, ‘এখন মনে হয়, তাদের আমার ছাড়া দেখা করা ভালো হবে…প্রয়োজনে আমি যাব।’
২০২২ সালে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আক্রমণের শুরু থেকে সেনারা ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দনবাস অঞ্চলের অধিকাংশ দখল করেছে, যার মধ্যে লুহানস্ক ও দোনেৎস্ক রয়েছে। বর্তমানে রাশিয়া ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে, যার মধ্যে ক্রিমীয় উপদ্বীপও রয়েছে, যা ২০১৪ সালে তারা সংযুক্ত করেছে।
মন্তব্য করুন