মিশিগান বাংলাদেশি আমেরিকানদের কাছে বসবাসের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণীয় জায়গা। অন্যান্য স্টেটের তুলনায় এখানে জীবনযাত্রার মান অনেক সহজলভ্য। তাই তো দিনে দিনে মিশিগানে মানুষের আনাগোনা বাড়ছে। এর সঙ্গে বেড়ে চলেছে রিয়েল এস্টেট ব্যবসার চাহিদা। বাংলা সংবাদ পত্রিকা রিয়েল এস্টেট ব্যবসার তথ্য সম্পর্কে আগ্রহীদেরকে জানাতে বদ্ধ পরিকর। এবারের আয়োজন ‘এমআর রিয়েলটি প্লাস’।
এমআর রিয়েলটি প্লাস বাড়ি ক্রয়-বিক্রয় প্রক্রিয়াকে সহজতর করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এর ফাউন্ডার সাবেক ব্যাংকার মাহমুদ রহমান। তিনি একজন ব্রোকার এবং লাইসেন্সপ্রাপ্ত লোন অফিসার। তাঁর নেতৃত্বে ২০২৩ সালে এমআর রিয়েলটি প্লাস যাত্রা শুরু করে। তিনি ২০১৮ সাল থেকে রিয়েল এস্টেট ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত। তাঁর সাথে এমআর রিয়েলটি প্লাস-এর বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়। তিনি জানান, তাঁর টিমে তিনিসহ মোট পাঁচজন রিয়েলেটর কাজ করেন। ‘উই মেইক ইজি ইউর হোম বাইয়িং প্রসেস’ স্লোগানকে ধারণ করে এ রিয়েল এস্টেট ব্যবসার যাত্রা শুরু হয়। এর লক্ষ্য-উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি জানান, সততা ও দক্ষতার মাধ্যমে একজন বাড়ির ক্রেতার বাড়িক্রয় প্রক্রিয়াকে সহজ ও আনন্দময় করা। যাতে বাড়িক্রেতা এ কাজে কখনোই বিরক্তিবোধ না করেন। এই প্রক্রিয়া যেন তার কাছে সবচেয়ে সহজ থাকে। রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় সমস্যা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেক মানুষের বাড়িক্রয় করতে গিয়ে ক্যাশ টাকা থাকে না। এজন্য তার মর্টগেজ লোন করতে হয়। এ প্রক্রিয়ার জন্য তাকে অনেক জায়গায় যেতে হয়। এমআর রিয়েলটি প্লাস এই জায়গায়ও ক্লায়েন্টকে ওয়ান স্টপ সার্ভিস হিসেবে সহজে লোন পেতে সাহায্য করে। সমস্যা সম্পর্কে তিনি আরো বলেন, বিশ্বে বাণিজ্যচক্রের জোয়ার-ভাটার কারণে অর্থনীতি অনেক সময় মন্দা হয়। এসময় রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ও কিছুটা সময় এর প্রভাব পড়ে। রিয়েল এসেস্ট ব্যবসার সম্ভাবনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, শুধু মিশিগান নয়, বিশ্বে রিয়েল এস্টেট একটি ভালো সেক্টর। মিশিগানে বাঙালি কমিউনিটিতে মানুষ বাড়ছে। মসজিদ, মাদরাসা কিংবা যেকোনো ক্ষেত্রে অনেকটা বাংলাদেশের অনুভূতিটা জাগে। এ কমিউনিটির অনেক সম্ভাবনা আছে এখানে। আমেরিকান স্বপ্নের একটি অংশ হচ্ছে নিজের একটি বাড়ি থাকা। এ স্বপ্নের বাস্তবায়নে সবাই বাড়িক্রয়ে মনোযোগী হন। এ হিসেবে রিয়েল এস্টেট ব্যবসার সম্ভাবনা অনেক। ইনভেস্টরদের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, রিয়েল এস্টেট বিশ্বে এমন একটি সেক্টর যার ডিমান্ড কখনো কমে না। সাময়িক মূল্য হয়তো একটু কমতে পারে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী রিয়েল এস্টেটে কোনো লস নেই। মূল্য যাই হোক, কেউ রিয়েল এস্টেটে কোনো প্রপার্টি কিনলে নির্দিষ্ট সময়ে তিনি লাভ নিতে পারবেন। এজন্য ইনভেস্ট করা প্রয়োজন। কমিউনিটির প্রতি আহবান সম্পর্কে জানতে চাইলে মাহমুদ রহমান জানান, এখানে বাড়ির মালিক হওয়া কঠিন কিছু না। একটি ডিসেন্ট জব ও কিছু ডাউনপেমেন্ট থাকলে এবং ক্রেডিট স্কোরটা একটু ভালো হলেই এখানে একটি বাড়ির মালিক হওয়া সম্ভব। এজন্য কমিউনিটির প্রত্যেকের শৃঙ্খলা মেনে জীবন পরিচালনা করা উচিত। বাড়িক্রয়ে যেকোনো সহযোগিতার প্রয়োজন হলে এমআর রিয়েলটি প্লাস সর্বদা তাঁর পাশে থাকবে। ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি জানান, ভবিষ্যতে তিনি তাঁর টিমকে আরো বৃহত্তর পর্যায়ে নিয়ে যেতে চান।
মাহমুদ রহমান
এমআর রিয়েলটি প্লাস-এর ফাউন্ডার এবং ব্রোকার। তিনি ২০১৭ সালে আমেরিকার মিশিগানে এসেছেন। অর্থনীতিতে অনার্স ও মাস্টার্স মাহমুদ রহমান দীর্ঘ ১৪ বছর ব্যাংকিং পেশার সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি ২০১৮ সাল থেকে রিয়েল এস্টেট ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত। এছাড়া তিনি একজন লাইসেন্সপ্রাপ্ত লোন অফিসার। বাড়িক্রয়ে মর্টগেজ লোনের জন্য তিনি সার্ভিস দিয়ে থাকেন। রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় তাঁর রয়েছে দক্ষতা, যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা।
বাহার উদ্দিন
বাহার উদ্দিন এমআর রিয়েলটি প্লাস-এর একজন এজেন্ট। তিনি ১৯৯৯ সালে সিলেট সরকারি কলেজ থেকে এসোসিয়েট ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ২০০২ সালে প্রথম আমেরিকায় আসেন। তিনি দীর্ঘ ১০ বছর ম্যানুফ্যাক্চারিং কোম্পানিতে টিম লিডার হিসেবে কাজ করেছেন। এরপর ট্রয়স্থ মিডলটন রিয়েল এস্টেট থেকে রিয়েল এস্টেটের ওপর পড়ালেখা করেন এবং ২০১৯ সাল থেকে রিয়েল এস্টেট ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।
নূর উদ্দিন
নূর উদ্দিন ২০০২ সালে বাংলাদেশ থেকে আমেরিকায় এসেছেন। ২০১২ সালে একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে ব্যাচেলর সম্পন্ন করেন। এরপর বিভিন্ন রেপুটেড কোম্পানিতে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করছেন। পাশাপাশি ২০২৩ সাল থেকে রিয়েল এস্টেটে লাইসেন্স নিয়ে এমআর রিয়েলটি প্লাসে একজন এজেন্ট হিসেবে কাজ করছেন।
জয়ন্ত দেব
জয়ন্ত দেব বাংলাদেশে অর্থনীতিতে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। তিনি ২০১০ সালে আমেরিকায় এসেছেন। এখানে তিনি জেনারেল মটরস-এ কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করছেন। পাশাপাশি ২০২০ সাল থেকে রিয়েল এস্টেট ব্যবসার সাথে যুক্ত আছেন। তিনি এমআর রিয়েলটি প্লাস-এর একজন রিয়েলেটর। রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় তিনি বেশ দক্ষতা ও পারদর্শিতার পরিচয় দিচ্ছেন।
রেফাকুল আলম
রেফাকুল আলম ২০১২ সালে আমেরিকায় এসেছেন। তিনি ইনফরমেশন সিস্টেম্স ম্যানেজমেন্ট-এর ওপর ব্যাচেলর করেছেন। তিনি একজন ডায়াগনস্টিক সফটওয়ার ডিজাইন রিলিজড ইঞ্জিনিয়ার। এর পাশাপাশি তিনি এমআর রিয়েলটি প্লাস-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় কাজ করছেন।
মন্তব্য করুন