একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রাবন্ধিক ও গবেষক অধ্যাপক ড. গোলাম মুরশিদ মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্নালিল্লাহি রাজিউন)। বৃহস্পতিবার বিকেল ৪ টায় লন্ডনের কুইন্স হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।
গোলাম মুরশিদের স্ত্রী এলিজা মুরশিদের বরাত দিয়ে বাংলা একাডেমির পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ড. তপন বাগচী তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, মৃত্যুর আগে তার পাশে ছিলেন স্ত্রী এলিজা মুরশিদ ও কন্যা বিপাশা গার্গী। গোলাম মুরশিদের ছেলে পাণিনি মুরশিদ (অন্তু) আমেরিকায় অবস্থান করছেন। তিনি লন্ডনে পৌঁছানোর পর গোলাম মুরশিদকে লন্ডনে সমাহিত করা হবে।
গোলাম মুরশিদ ১৯৪০ সালের ৮ এপ্রিল বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। তিনি ছিলেন লন্ডনপ্রবাসী একজন বাংলাদেশী লেখক, গবেষক, সংবাদ উপস্থাপক এবং আভিধানিক।
গোলাম মুরশিদ এর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপক ছিলেন। ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনে (বিবিসি) সংবাদ পাঠক ও উপস্থাপক হিসেবে কাজ করতেন। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা ও গবেষণায় যুক্ত ছিলেন। লন্ডনের স্কুল অব অরিয়েন্টাল এন্ড আফ্রিকান স্টাডিজের একজন গবেষণা সহযোগী ছিলেন তিনি। কাজের ফাঁকে ফাঁকে তিনি ভয়েস অব আমেরিকাতেও কন্ঠ দিতেন। তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান। ২০২১ সালে ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদক লাভ করেন।
গোলাম মুরশিদ বাংলা সাহিত্য, ইতিহাস, সংস্কৃতি ও সমাজ নিয়ে বেশ কিছু গ্রন্থ রচনা করেছেন। নারী অধ্যয়ন, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য, এবং বাংলার সামাজিক-সাংস্কৃতিক ইতিহাসসহ বিভিন্ন বিষয়ে তিনি ৩০টিরও বেশি বই ও অসংখ্য প্রবন্ধ প্রকাশ লিখেছেন।
তার উল্লেখযোগ্য রচনার মধ্যে রয়েছে, আশার ছলনে ভুলি (১৯৯৫); কালান্তরে বাংলা গদ্য (১৯৯২); রাসসুন্দরী থেকে রোকেয়া: নারী প্রগতির একশো বছর (১৯৯৩); সংকোচের বিহ্বলতা (১৯৮৫); সমাজ সংস্কার আন্দোলন ও বাংলা নাটক (১৯৮৫); বাংলা মুদ্রণ ও প্রকাশনার আদিপর্ব (১৯৮৬); রেলাকট্যান্ট ডেবুট্যান্ট: রেসপন্স অফ বেঙ্গলি ওমেন মডার্নাইজেশন (১৯৮৩); রবীন্দ্রবিশ্বে পূর্ববঙ্গ পূর্ববঙ্গে রবীন্দ্রচর্চা (১৯৮১) স্বাধীনতা সংগ্রামের সাংস্কৃতিক পটভূমি (১৯৭১)।
মন্তব্য করুন