কমিউনিটি হেল্পিং হ্যান্ডস (সি. এইচ. এইচ) মিশিগানে অবস্থিত এমন একটি সংগঠন যারা কমিউনিটির স্বার্থে সর্বদা নিয়োজিত থাকে। এটি মূলত একটি ডিজিটাল প্লাটফর্ম। সবাই মূলত এখানে যোগাযোগ করে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে। কমিউনিটি হেল্পিং হ্যান্ডস মানুষের সাহায্যের সুবিধার্থে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের গ্রুপে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। আপনার বাসা ভাড়া কিংবা মেডিকেল সহায়তা, চাকুরীর তথ্য কিংবা ইমিগ্রেশন সম্পর্কিত তথ্য ইত্যাদি প্রয়োজন হলে আপনি গ্রুপের মেম্বারদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
নাজেল হুদা তাদের মূল উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলেন, “কমিউনিটির মানুষ প্রায়শ ছোট বড় নানার সমস্যায় পড়েন। তারা আমাদের কাছে সাহায্য চাইলে আমরা তৎক্ষণাৎ সাধ্যমত চেষ্টা করি সমাধান করতে। মানুষ মানুষের জন্য। আমাদের কমিউনিটির মানুষকে কিভাবে খুব স্বল্প সময়ে সঠিকভাবে সাহায্য করা যায় সেটা আমাদের মূল উদ্দেশ্য। এসব চিন্তা থেকে মূলত আমরা ফেসবুক গ্রুপ তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করি। সংগঠনের ফেসবুক পেজের মেম্বার বর্তমান ২ হাজার ২০০ এর অধিক। সবাই মিশিগানের বাসিন্দা।
কমিউনিটির পরিচিত মুখ নাজেল হুদা। তিনি একজন দক্ষ সংগঠক, সমাজসেবক এবং তিনি মূলত চলতি বছরের শুরুতে কমিউনিটি হেল্পিং হ্যান্ডস গ্রুপ চালু করেন। তবে অনেক আগে থেকেই চলছিল তাদের কার্যক্রম। গ্রুপের এডমিন ও মডারেটরদের মধ্যে আছেন নাজেল হুদা (মিশিগান এক্সপ্রেস ট্রেন), মইনুল হক, জুয়েল হুদা, ম্যাক্স সাইফুর ও জসিম উল্লাহ। বাঙালি কমিউনিটিতে কমিউনিটি হেল্পিং হ্যান্ডস বিভিন্ন সময়ে নানা ধরনের কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে।
মিশিগানে বাংলাদেশের কোন স্থায়ী কনস্যুলেট অফিস নাই। যার কারণে বাংলাদেশিরা প্রতিনিয়ত সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। করোনার আগে আমরা মিশিগানে স্থায়ী কনসুলেট অফিস নির্মাণের জন্য গণস্বাক্ষর কর্মসূচি গ্রহণ করি। তবে সম্প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মতি সাপেক্ষে মিশিগানের স্থায়ী কনসুলেট অফিস স্থাপন করার জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন এর কাছে দরখাস্ত করা হয়।
চলতি বছর কমিউনিটি হেল্পিং হ্যান্ডস গ্রুপ হ্যামট্রামিকের বাংলাদেশ এভিনিউতে নিয়ে আসেন ২১তম পথমেলা।মিশিগানের জনপ্রিয় পত্রিকা বাংলা সংবাদ ছিল মিডিয়া পার্টনার। পথ মেলার উদ্দেশ্য ছিল বাঙালি কমিউনিটিকে বছরের একটি দিন একত্রিত করা, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তাদের দেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে সচেতন করা। তিন দিনব্যাপী মেলার মূল আকর্ষণ ছিল বাউল শিল্পী কালামিয়া ও লাবনীর গান। জুলাই মাসের শেষ তিন দিন উক্ত পথমেলাকে কেন্দ্র করে নাচ-গান-আড্ডায় মুখরিত হয়ে ওঠে হ্যামট্রামিকের বাংলাদেশ এভিনিউ। নাজেল হুদা তার ব্যতিক্রমী চিন্তাভাবনায় মিশিগানবাসীকে বাংলা সংস্কৃতির সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। সেখানে বসবাসরত বাঙালির স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে গত ২ দশক ধরে চলমান এই পথমেলা এখন বাঙালির প্রাণের মেলায় পরিণত হয়েছে।
নাজেল হুদা জানান, তারা বর্তমানে কাজ করছেন বয়স্কদের সিটিজেনশীপ সমস্যা নিয়ে । “যাদের অনেক বয়স হয়ে গেছে কিন্তু এখনো নাগরিকত্ব পাননি তাদেরকে আমরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। অতি শীঘ্রই আমরা সিটিজেনশীপের উপরে ক্লাস চালু করতে যাচ্ছি। এখানে সিটিজেনশীপ নেওয়ার বিভিন্ন প্রক্রিয়া সম্পর্কে তাদের প্রস্তুত করা হবে। এটা কিছুটা প্রশিক্ষণের মত। “তাছাড়া যারা ভোটার হন নাই তাদের ভোটার করার জন্য আমাদের নতুন কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছি।” তিনি যোগ করেন। কমিউনিটিতে পূর্বে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের প্রতি কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশ করলেন নাজেল হুদা। তার মতে, “অতীতে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন তারা কমিউনিটিতে খুব বেশি অবদান রাখতে পারেননি।”
কমিউনিটির মানুষদের সব দিক থেকে এগিয়ে রাখা, সকল সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করা সিএইচএইচ এর ভবিষ্যৎ উদ্দেশ্য বলে জানান নাজেল হুদা।
মন্তব্য করুন