যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যের ওয়ারেন শহরে বসবাসকারী মুন্নি রহমান শেফা তাঁর সৃজনশীল কর্মযজ্ঞ দিয়ে মাতিয়ে রাখছেন এশিয়ান আমেরিকান কমিউনিটির লোকজনকে।
কমিউনিটির সেবায় নিজেকে যুক্ত করেছেন হাজারও প্রতিবন্ধকতা ডিঙিয়ে। পুরোদস্তুর সাংগঠনিক মন-মননে মানুষের সেবা ও উন্নতির পথে যা করণীয়, মুন্নি রহমান নিজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে পথ বাতলে দিচ্ছেন।
শিক্ষার্থীকালীন সময় হতে গণমানুষের তরে কাজ করার তীব্র ইচ্ছে দানা বাঁধে আর সেই সময় এখনও লড়ে চলেছেন সমান তালে। মেধাবী শিক্ষার্থী মুন্নি রহমান শেফা মিশিগানের খ্যাতনামা বিদ্যাপীঠ ডেভিস অ্যারোস্পেস টেকনিক্যাল হাই স্কুল থেকে স্নাতক এবং কালামাজো কলেজ এবং ওয়েন স্টেট ইউনিভার্সিটি হতে সমাজবিজ্ঞানে উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করেন।
কালামাজো ক্যাম্পাসে থাকাকালীন বাংলাদেশি হিসেবে ডেভিসে ফ্লাইট ট্রেনিং প্রোগ্রামের পাশাপাশি HUB-এ যোগদানকারী ব্যক্তিদের একজন। ওয়ারেন শহরের খ্যাতনামা বিদ্যাপীঠগুলোয় পড়াকালীন সময়ে বিভিন্ন সাংগঠনিক কর্মে নিজেকে জড়ান, শিক্ষার্থীদের সংগঠনে নেতৃত্ব দেন।
রাইজিং ভয়েসেস সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হন, বর্তমানে ম্যাকম্ব কাউন্টি কমিউনিটি অর্গানাইজার হিসেবে কাজ করছেন এই সংগঠনের সঙ্গে।
মিশিগান এই সংগঠন এশীয় আমেরিকান সম্প্রদায়কে স্থানীয়, রাজ্য এবং ফেডারেল নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য ভোটারদের সংগঠিত করে, এশিয়ান আমেরিকান প্রার্থীদের উন্নয়ন, আত্মীয়তামূলক আয়োজন, রাজনৈতিক শিক্ষা এবং নির্বাচনী সুরক্ষা বিষয়ে কাজ করে।
মুন্নি রহমান শেফা বলেন, ‘সংগঠনের মাধ্যমে কাজের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে সম্মিলিত শক্তির প্রয়াসে বৃহৎ পরিসরে নিজের কর্মযজ্ঞ পৌঁছে দেয়া যায়। নবীন প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য সমাজ ও পৃথিবী গড়তে নিজ নিজ অবস্থান হতে সকলেরই ভূমিকা রাখা উচিত।’
কমিউনিটির অগ্রযাত্রা সুদৃঢ় করতে মুন্নি রহমান শেফা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। যুব ও নারীর ক্ষমতায়ন, ভাষার অ্যাক্সেস বৃদ্ধি, বাঙালি কমিউনিটির স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, অভিবাসী এবং নিম্ন বেতনের কর্মীদের জন্য তিনি নিজের অবস্থান হতে কাজ করছেন। ডব্লিউসিএস বন্ড কমিটির একজন হিসেবে তিনি ক্রমবর্ধমান বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের জন্য ব্যালটগুলোকে বাংলায় অনুবাদ করার অনুরোধ করেন। তিনি সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে জনপ্রিয় মিশিগান বাংলাদেশি কমিউনিটি হেল্প গ্রুপের এডমিন হিসেবে যুক্ত আছেন।
নিজের সকল কাজে অনুপ্রেরণায় সবচেয়ে বড় শক্তি হিসেবে কাছে পান নিজের মাকে। তাঁর সন্তানেরা ইতিবাচক কাজগুলোতে যুক্ত থাকার বিষয়ে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রাণিত করে। সেইসাথে শৈশব হতে অনুপ্রেরণা যুগিয়ে যাচ্ছেন ১৯৯২ সালে মহাকাশে পাড়ি জমানো প্রথম আমেরিকান-আফ্রিকান মহিলা মে সি জেমিসন। মুন্নি রহমান শেফা এখনও মহাকাশ ভ্রমণের চিন্তা পুরোপুরি ত্যাগ করেননি !
যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্য অভিবাসী বসতির বৈচিত্র্যময় আবাসস্থল, যাদের সকলেই জাতির সাংস্কৃতিক কাঠামোতে অবদান রেখে চলেছে। মুন্নি রহমান বাঙালি সম্প্রদায়ের একজন আলোকিত মুখ যিনি নিজ সম্প্রদায়ের লোকজনের সামগ্রিক উন্নয়নে অবদান রাখছেন।
তিনি মনে করেন, সুকর্মই মানব জীবনের সার্থকতা। এ ধরাধামে আগমন তখনই পূর্ণতা লাভ করবে যখন নিজ কর্মের গুণ অন্যের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে। সুকর্মের আলো চারিদিকে ছড়িয়ে সেই আলো মেখে পথ হাঁটতে পারাটা মহাতৃপ্তির।
মন্তব্য করুন