চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আর শ্যাটল ট্রেন এ যেন একে অন্যের পরিপূরক হয়ে আছে । চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিতে হাজারো ছাত্র-ছাত্রীদের কত আনন্দ বেদনা কত গল্প রচিত হয়েছে সেই শ্যাটল ট্রেনে। কিংবা তপ্ত দুপুরে শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্র জীবনের সোনালী মুহুর্তের বাধাঁই করা মুহুর্ত যেন স্মৃতিভান্ডারের সেরা অর্জন। প্রবাসের মাটিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষকবৃন্দের স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে উঠে এসেছে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের অনেক না জানা গল্প।
চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৮ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে মিশিগানের ওয়ারেন শহরে। ১৯ শে নভেম্বর রবিবার সন্ধ্যায় নিজস্ব কার্যালয়ে চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন অব মিশিগান ইউএসএ-এর আয়োজনে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকরা। জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতার পর কাটা হয় কেক। এর পর শুরু হয় আলোচনা সভা । সৈয়দ মঈন দীপুর সভাপতিত্বে এবং সংগীতা বড়ুয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন কমিটির আহবায়ক লুৎফুর বারি নিয়ন। এর পর শুরু হয় চবিয়ানদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের নানা জানা-অজানা, আনন্দ-বেদনা আর চবিয়ানদের নানা অর্জনের গল্প। শাহ খালিশ মিনার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে যৌবনের সোনালী সময়ের স্মৃতিচারণে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়লেও চবিয়ানদের সাফল্যের গল্প বলেন লুৎফুর রহমান। চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন অব মিশিগান ইউএসএ-এর সাধারণ সম্পাদক লুৎফুর দৃঢ? উচ্চারণে সগৌরবে জানিয়ে দেন দেশে-বিদেশে রাস্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদপদবীতে বসা চবিয়ানদের আলো ছড়ানো সফলতার কথা। মোহাম্মদ আফতাব বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বেড়ে উঠা, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা জীবনের স্মৃতিচারণে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন। অনুষ্ঠান যেন পরিপূর্ণ হয়ে উঠে সাবেক শিক্ষকদের উপস্থিতিতে।
চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ডক্টর রবিন্দ্র নাথ শীল এমন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পেরে নিজে গর্বিত উল্লেখ করে বলেন, একজন শিক্ষক হিসেবে আমি যেমন গর্ব অনুভব করি তেমনি গর্বিত আমার ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে। সাবেক সহযোগী অধ্যাপক ডক্টর তাহলিল আজিম চৌধুরী চট্টগ্রাম বিশ্ব বিদ্যালয়ে ছাত্র থেকে শিক্ষক হওয়ার অজানা গল্পের পাশাপাশি একজন শিক্ষকের দায়বদ্ধতার কথা বলেন। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, বাংলা প্রেসক্লাব অব মিশিগান ইউএসএ-এর সভাপতি হেলাল উদ্দীন রানা, বাংলা প্রেসক্লাব অব মিশিগানের সাবেক সভাপতি সৈয়দ শাহেদুল হক।
আলোচনা সভা শেষে শুরু হয় নানা আনন্দ আয়োজন।কৌতুক পরিবেশন করেন জিয়াউল আলম চৌধুরী। জিয়ার কৌতুক উপস্থিত দর্শকদের মাতিয়ে রাখে।কবিতা আবৃত্তি করেন মোতাকাব্বির শাহীন। শাহীনের ভরাট কন্ঠের প্রাণবন্ত আবৃত্তি উপস্থিত দর্শকদের দৃষ্টি কাড়ে। আবৃত্তিতে নিরাশ করেননি রুনা কোরেশি। তার সময় উপযোগী কবিতা মুহুর্তের জন্য হলেও শ্রোতাদের বাস্তবতা মুখোমুখি করে দিয়েছিল। গানে গানে উপভোগ্য হয়ে উঠে অনুষ্ঠানস্থলটা। পরিশেষে বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের জনপ্রিয় গান “আগে কি সুন্দর দিন কাটাতাইতাম” সমবেত কন্ঠে নেচে গেয়ে উল্লাসে মেতে উঠে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র-ছাত্রীরা। যেন ফিরে গিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিয় ক্যাম্পাসে অথবা শ্যাটল ট্রেনে মুখোমুখি বসা আনন্দ-বেদনার সেই দিনগুলোতে।
মন্তব্য করুন