ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে সহিংসতার মাত্রা বেড়ে যাওয়াও এ অঞ্চলে শান্তির আহ্বান আরও জোরালো হচ্ছে। চলমান সংঘাতে গাজায় আটকে পড়া লাখ লাখ ফিলিস্তিনি নাগরিকের জীবন ও সুস্থতা হুমকির মুখে পড়েছে।
শুক্রবার জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার ভলকার তুর্ক এক বিবৃতিতে বলেন, “এই সহিংসতার অবসান হতে হবে এবং এই ধ্বংসযজ্ঞের বিকল্প খুঁজে বের করার জন্য জোরালো উদ্যোগ নিতে হবে।”
তুর্ক সতর্ক করেন, গাজায় আটকে থাকা ২২ লাখেরও বেশি মানুষ মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়তে যাচ্ছেন। তিনি জানান, এই মানুষগুলোকে সমষ্টিগতভাবে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস ২৪ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে নিরাপত্তা পরিষদে দেয়া বক্তব্যে মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি সম্পর্কে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, গাজাতে ইসরাইলের অবরোধ ‘আন্তর্জাতিক মানবতা আইনের স্পষ্ট লংঘন’।
“সমষ্টিগত শাস্তি এক ধরনের যুদ্ধাপরাধ। ইসরাইল গাজার সম্পূর্ণ জনগোষ্ঠীকে শাস্তি দিচ্ছে যা এ মুহূর্তে থামানো দরকার”, বলেন তিনি।
ইসরাইল শনিবার বলেছে তারা দিনের শেষভাগে গাজায় খাবার, পানি ও ওষুধ বহনকারী ট্রাক ঢুকতে দেবে। এই বক্তব্যে বোমাবর্ষণ স্থগিত রাখার ইঙ্গিত রয়েছে। অন্তত, মিশরের সঙ্গে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে, যেখানে স্বল্প পরিসরে ত্রাণ আসতে দেওয়া হয়েছে।
সশস্ত্র সংগঠন হামাস ৭ অক্টোবর ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী হামলা চালানোর পর তাদের বিরুদ্ধে দেশটি অভিযান শুরু করে। হামাসের হামলায় শিশুসহ ১ হাজার ৪০০ ইসরাইলি নিহত হন এবং ৫ হাজার ৩৪০ জনেরও বেশি আহত হন। অন্তত ২০০ মানুষকে জিম্মি করে সংগঠনটি।
১৯৯৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে। ইসরাইল, মিশর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানও হামাসরে ম ন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।
তুর্ক একইসঙ্গে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র বাহিনীর হামলার প্রতিও নিন্দা জানান, যার মধ্যে ইসরাইলে অনিয়ন্ত্রিতভাবে রকেট নিক্ষেপ অন্যতম। তিনি বলেন, এসব হামলাও বন্ধ হওয়া দরকার।
জাতিসংঘের মানবিক উদ্যোগ সমন্বয় কার্যালয় বা ওসিএইচএ গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজা ২৯৮ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১২৫ জন শিশুও আছে। ৭ অক্টোবর থেকে শুরু করে গাজায় অন্তত ৭ হাজার ৩২৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত ও প্রায় ১৯ হাজার আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৬৬ শতাংশই শিশু ও নারী।
অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলের মানবিক সহায়তা সমন্বয়কারী কর্মকর্তা লিন হেসটিংস বলেন, “গাজায় এখন কোনো নিরাপদ জায়গা নেই”।
বাংলা সংবাদের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
মন্তব্য করুন