পুরো বর্ষা মৌসুমে হাতে গোনা কয়েকদিন মাত্র বৃষ্টি হওয়ার পর আর মেঘের দেখা নেই। বৃষ্টির অভাবে একদিকে আমনের মৌসুমে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছেন কৃষকরা, অন্যদিকে ক্ষেতে থাকা সবজির ফসলও কমে গেছে।
আষাঢ় শেষে শ্রাবণ যে সময়ে বৃষ্টিপাতের কথা কিন্তু এই সময়ে মৌলভীবাজারের বড়লেখায় দিনে আগুনে রোদ ও গরমে খাঁ খাঁ করে চারদিক। রাতেও কমে না তাপমাত্রা।
তীব্র গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। গরমের কারণে বাড়ছে হিট স্ট্রোকের মতো স্বাস্থ্যঝুঁকি। ডায়রিয়ায়ও আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে।
তীব্র গরমে নাজেহাল অবস্থা প্রতিটি শ্রেণি-পেশার মানুষের। বিশেষ করে শ্রমজীবী ও কর্মজীবীদের জীবন যেন বেরিয়ে যাওয়ার উপক্রম। তারপরও জীবন-জীবিকার তাগিদে ঘাম ঝরিয়ে ছুটতে হচ্ছে তীব্র গরম আর রোদে পুড়ছে বড়লেখাবাসী।
ফলে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত দিনমজুর পরিবারের দিন কাটছে দুর্বিসহভাবে। এদিকে ব্যাপক লোডশেডিংয়ের কারণে ঘরেও টেকা দায়। এতে শিশু ও বৃদ্ধরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। আর আবহাওয়া অফিসও বৃষ্টির কোনও সুখবর দিতে পারছে না।
সরেজমিনের দেখা গেছে, রোদের তীব্রতার কারণে প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না কেউ। যে কারণে দোকানীদের অবসর সময় কাটাতে হচ্ছে। যানবাহনগুলো লাইন ধরে ঠায় দাঁড়িয়ে থেকেও যাত্রীর দেখা মিলছে না।
কলেজ শিক্ষার্থী সুমন আহমদ জানিয়েছেন, তীব্র গরমে আমরা অতিষ্ঠ। ঠিকমত পড়া লেখা করতে পারছি না, কলেজে যেতে পারছি না। তার উপর দিনের বেশির ভাগ সময় বিদ্যুৎ থাকে না।
রাজমিস্ত্রি ছয়েফ উদ্দিন জানান, তীব্র গরমে দুই তিনদিন কাজ করার পর আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। তারপর দুইদিন চিকিৎসা নেওয়ার পর সুস্থ হয়েছি। এই তীব্র গরমে কাজ করা অসম্ভব হয়ে পড়ছে। এতে আয়ও কমে যাচ্ছে আমাদের।
এদিকে আজ দু’দিন থেকে আকাশে মেঘ জমে আছে। খানিকটা স্বস্তির দেখা দিলেও অঝোর ধারায় বৃষ্টি হচ্ছে না। সকলের মনে একটাই প্রশ্ন বৃষ্টি হবে কবে?
বাংলা মেডিসিনের পরিচালক মিরাজুল ইসলাম জানান, গরম ও ঋতু পরিবর্তনের কারণে আমার ফার্মেসীতে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আমাদের প্রাইভেট ডাক্তার তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা ও পরামর্শ দিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। আমরা গরমে বেশি বেশি পানি ও পানীয় খাবার পান করার পরামর্শ দিচ্ছি।
তবে আমরা আশা করছি, যদিও আকাশে মেঘ জমে আছে এই অবস্থার পরিবর্তন হবে। তখন হয়তো দেশের কোন কোন অঞ্চলসহ আমাদের বড়লেখাও বৃষ্টি হতে পারে।
বড়লেখা নিয়ে আরও পড়তে এখানে ক্লিক করুন
মন্তব্য করুন