গত বছর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি লঞ্চ হওয়ার পর থেকেই জেনারেটিভ এআই’র ভালো ও মন্দ দিক, সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে অসংখ্য মতামত ও সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশ পেয়েছে।
যার ফলে অনেকেই কল্পবিজ্ঞানভিত্তিক “ডিস্টোপিয়ান” ভবিষ্যৎ নিয়ে আশংকা করতে শুরু করেছেন যে রোবটরা সারা বিশ্বের দখল নিয়ে নেবে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এ ধরনের আলোচনা অতিরঞ্জিত হলেও, একটি নতুন প্রতিবেদনে চ্যাটজিপিটির মতো অ্যাপগুলোর একটি তাৎক্ষনিক ঝুঁকি চিহ্নিত করা হয়েছে। তার মধ্যে কিছু ঝুঁকি রয়েছে যা সাংবাদিক ও সংবাদ খাতের প্রতি সুনির্দিষ্ট চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে।
বুধবার নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টার্ন সেন্টার ফর বিজনেস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জেনারেটিভ এআই সংক্রান্ত ৮টি ঝুঁকি চিহ্নিত করা হয়েছে, যার মধ্যে আছে ভুল তথ্য, সাইবার হামলা, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন ও সংবাদ শিল্প খাতের ক্ষয়।
এই প্রতিবেদনের সহ-লেখক পল ব্যারেট ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, এআই সংক্রান্ত বিতর্ক “মানবজাতির অস্তিত্ব সংকট বনাম জেনারেটিভ এআইর তাৎক্ষনিক হুমকি নিয়ে উদ্বেগে কিছুটা বিভ্রান্তিকর আকার ধারণ করেছে।” তিনি বলেন, “আমাদের এখন এ ধরনের প্রশ্নে আটকে থাকলে চলবে না যে, ‘হায় ঈশ্বর, এই প্রযুক্তি কী খুনী রোবট নিয়ে আসবে, যারা মানব সভ্যতাকে ধ্বংস করে ফেলবে?’”
প্রতিবেদনে উল্লেখিত ঝুঁকির মধ্যে সবচেয়ে উদ্বেগজনক হল মানবিক পর্যায়ের হুমকি, যার মাধ্যমে এআই সাংবাদিক ও অধিকার কর্মীদের নিরাপত্তার প্রতি হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।
ইতোমধ্যে অনলাইনে সাংবাদিকরা তাদের কাজের জন্য ডক্সিং বা কুৎসা রটনার মতো হুমকির মুখোমুখি হচ্ছেন। যখন কোনো ব্যক্তি অপর কোনো ব্যক্তির ব্যক্তিগত বা তাকে চিহ্নিত করার মতো কোনো তথ্য অনলাইনে প্রকাশ করেন—যেমন তার ঠিকানা বা ফোন নাম্বার—তখন সেটিকে ডক্সিং বলা হয়।
ব্যারেটের মতে, জেনারেটিভ এআই-র ব্যবহারে সংবাদদাতাদের অনলাইনে ডক্স ও হয়রানি করা আরো সহজ হতে পারে।
প্রতিবেদনে আরেকটি মৌলিক ঝুঁকির কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যেটি হল বিভ্রান্তিকর তথ্য। জেনারেটিভ এআই ব্যবহার করে খুব সহজেই অপপ্রচার চালানো সম্ভব।
প্রতিবেদন মতে, জেনারেটিভ এআই সংবাদমাধ্যমকে আরও আর্থিক অনটনের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
যদি মানুষ চ্যাটজিপিটির কাছ থেকে পাওয়া সংক্ষিপ্ত উত্তরে সন্তুষ্ট হয়, তাহলে তাদের সংবাদ প্রতিবেদনের লিংকে ক্লিক করার সম্ভাবনা কম থাকবে। অর্থাৎ, সংবাদ সাইটে ট্রাফিক কমে যাবে এবং বিজ্ঞাপন থেকে কম আয় হবে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে আরও পড়তে এখানে ক্লিক করুন
মন্তব্য করুন