মারিয়া আলেক্সিয়েভনা এলভোভা-বেলোভা ২০১৯ সালে পুতিনপন্থী রাশিয়া ইউনাইটেড পার্টিতে যোগ দেন। ২০২১ সালে পুতিন তাঁকে শিশু অধিকারবিষয়ক কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেন। তার বিরুদ্ধেও ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।
—————————————————————————————————————————–
রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের শিশু অধিকারবিষয়ক কমিশনার মারিয়া আলেক্সিয়েভনা এলভোভা-বেলোভা, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর তথ্য অনুসারে, মারিয়া বেলোভার রাজনৈতিক উত্থান হয়েছে অবিশ্বাস্য গতিতে। তিনি ২০১৯ সালে পুতিনপন্থী রাশিয়া ইউনাইটেড পার্টিতে যোগ দেন এবং ২০২১ সালে পুতিন তাঁকে শিশু অধিকারবিষয়ক কমিশনার হিসেবে নিযুক্ত করেন। অল্পদিনের মধ্যে তিনি দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসাবে নির্বাচিতও হন।
মারিয়া বেলোভার ১৯৮৪ সালে রাশিয়ার মধ্যাঞ্চলের পেনজা শহরে জন্ম ও বেড়ে ওঠা। তাঁর স্বামী একজন ধর্মযাজক। তাঁদের পাঁচ সন্তান রয়েছে। পাশাপাশি ১৮ শিশুকে তারা দত্তক নিয়েছেন। সেই হিসাবে এই দম্পতির বর্তমান সন্তান সংখ্যা ২৩।
গত মাসে টেলিভিশনে সাক্ষাৎকারে মারিয়া বেলোভা ইউেক্রেনের মারিউপোলের আরও এক কিশোরকে ‘দত্তক’ নেওয়ায় প্রেসিডেন্ট পুতিন তাকে সাধুবাদ জানান।
এছাড়াও, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর রিয়া নভোস্তি নিউজ এজেন্সিকে মারিয়া বেলোভা বলেছেন, ‘এটি দুর্দান্ত যে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আমাদের দেশের শিশুদের সাহায্য করার জন্য এই কাজের প্রশংসা করেছে। কেননা, আমরা তাদের যুদ্ধের মাঠে ছেড়ে দেইনি, আমরা তাদের বের করে নিয়ে এসেছি, তাদের জন্য ভালো অবস্থান তৈরি করেছি, তাদের ভালোবাসা ও যত্ন দিয়ে ঘিরে রেখেছি।’
মারিয়া বেলোভার কর্মজীবন শুরু শিশুদের গিটার শিক্ষক হিসেবে। তিনি পেনজায় একটি ফাউন্ডেশনও গড়ে তুলেছিলেন যেখানে প্রতিবন্ধী ও বয়স্কদের বিশেষ সেবা দেওয়া হতো। এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে তিনি গণমাধ্যমের নজরে আসেন। যদিও এই ফাউন্ডেশনের তহবিল নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে, ইউক্রেনের দখল করা অঞ্চলগুলো থেকে ছয় হাজারের বেশি শিশুকে রাশিয়ায় স্থানান্তর করা হয়েছে। তাদের প্রাথমিক লক্ষ্য হিসাবে ধারণা করা হয় তাদেরকে প্রেসিডেন্ট পুতিনের রাজনৈতিক আদর্শে দীক্ষিত করা। তবে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত রাশিয়ার দূতাবাস এই অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেছে।
আরও পড়ুন:পুতিনের গ্রেফতারি পরোয়ানার মধ্যে মারিউপোল শহর সফর
এর আগে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-সহ অস্ট্রেলিয়া ও কানাডা মারিয়া বেলোভার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়। ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে পুতিন ও মারিয়া বেলোভার বিরুদ্ধে গত শুক্রবার পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। কারণ হিসাবে আইসিসি এক বিবৃতিতে জানায়, ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার দখল করা অঞ্চলগুলো থেকে শিশুদের বেআইনিভাবে রাশিয়ায় সরিয়ে নেওয়ার সঙ্গে পুতিনের হাত আছে বলে সন্দেহ সাপেক্ষে এই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। তবে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই সোইগু কিংবা যুদ্ধের মাঠের কোনো জেনারেলের বিরুদ্ধে এই পরোয়ানা জারি হয়নি।
আরও পড়ুন: অস্ত্রের উৎপাদন বাড়ানোর ঘোষণা পুতিনের
মন্তব্য করুন