যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মুসলিম আমেরিকানরা গুরুত্বপূর্ণ। ২০২০ সালে গুরুত্বপূর্ণ সুইং স্টেটগুলোতে ডেমোক্রেটরা খুব কম ব্যবধানে জয়ী হয়েছে।
এবারের নির্বাচনে মুসলিম আমেরিকানরা উল্লেখযোগ্য ব্যবধান গড়ে দিতে পারেন বলে আশাবাদী রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাদের ভোটের ক্ষেত্রে একটি বিষয়ই অগ্রাধিকার পেতে পারে। তাহলো গাজা যুদ্ধ। এ বিষয়ে অনলাইন আল জাজিরায় একটি নিবন্ধ লিখেছেন মোগাদেহ কনসাল্টিং-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ইনস্টিটিউট ফর সোশ্যাল পলিসি অ্যান্ড আন্ডারস্ট্যান্ডিং-এর সাবেক রিসার্স ডিরেক্টর ডালিয়া মোগাহেদ এবং ইনস্টিটিউট ফর সোশ্যাল পলিসি অ্যান্ড আন্ডারস্ট্যান্ডিং-এর ডিরেক্টর অব রিসার্স সাহের সেলোদ। এ নিবন্ধে তারা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার শতকরা প্রায় একভাগ হলেন মুসলিম। তবে তারা ভোটিং ব্লক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তারা সুইং স্টেটগুলোতেই বেশি বসবাস করেন। এসব সুইং স্টেটের হিসাবনিকাশ সামান্য এদিক ওদিক হলেই ফল গড়বড় হয়ে যেতে পারে বলে তারা মনে করছেন।
আগের চেয়ে এবারের নির্বাচনে মুসলিম সম্প্রদায় দৃশ্যত একটি বিষয়ে একাট্টা হয়েছে। তাহলো গাজা যুদ্ধ। মুসলিম ভোটারদের সবচেয়ে বেশি সমর্থন যে প্রার্থী পাবেন তিনি নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি থাকতে হবে। ইনস্টিটিউট ফর সোশ্যাল পলিশি অ্যান্ড আন্ডারস্ট্যার্ন্ডি-এর প্রকাশিত নতুন গবেষণা প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। তারা এই গবেষণা করেছে এমগাজে অ্যান্ড চেঞ্জ রিসার্সের সঙ্গে। জুনে এবং জুলাইয়ের শুরুতে তিনটি সুইং স্টেট- জর্জিয়া, পেনসিলভ্যানিয়া এবং মিশিগানের মুসলিমরা কেমন সাড়া দেবেন এবারের নির্বাচনে তার ওপর ভিত্তি করে একটি জরিপ চালানো হয়েছে। ২০২০ সালে এসব রাজ্যের মুসলিমরা ছিলেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সবচেয়ে বড় সমর্থক। কিন্তু গাজা যুদ্ধের ফলে তারা কোনদিকে মোড় নেবেন তা জানতে গবেষণা করা হয়েছে।
জরিপ থেকে জানা যায় যে, ২০২০ সালে মুসলিমদের শতকরা প্রায় ৬৫ ভাগ মুসলিম ভোটার ভোট দিয়েছেন জো বাইডেনের পক্ষে। ওই রাজ্যগুলোতে তিনি খুব কম মার্জিনে জয়ী হয়েছেন। ফলে এটা পরিষ্কার যে, জো বাইডেনের জয়ে মুসলিম ভোটারদের বড় অবদান ছিল। তিনি জর্জিয়াতে ১২০০০ ভোটে জিতেছেন। এ রাজ্যে মোট কমপক্ষে ৬১ হাজার মুসলিম ভোট দিয়েছেন। বাইডেন পেনসিলভ্যানিয়ায় জিতেছেন ৮১ হাজার ভোটে। এই রাজ্যে মুসলিমদের মধ্যে এক লাখ ২৫ হাজার জন ভোট দিয়েছেন। জরিপে উঠে আসে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন নির্বাচনী লড়াই থেকে সরে যাওয়ার আগে শতকরা মাত্র ১২ ভাগ মুসলিম বলেছেন, তারা বাইডেনকে ভোট দেবেন। ফলে তার প্রতি সমর্থনে এটা এক নাটকীয় পরিবর্তন। তবে বাইডেন সরে যাওয়ার পর প্রেসিডেন্ট পদে জোর প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন কমলা হ্যারিস। গাজা যুদ্ধ মুসলিম ভোটারদের ঐক্যবদ্ধ করেছে। তারা এটাকে বড় একটি ইস্যু হিসেবে দেখছেন। এটা আশা কেো হচ্ছে, ৫ নভেম্বরের নির্বাচনেও মুসলিমরা অন্যতম ফ্যাক্টর হিসেবে ভূমিকা রাখবেন। এটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
মন্তব্য করুন