যুক্তরাজ্যে ৩৬০টি বাড়ি কিনেছেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী

সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী যুক্তরাজ্যে ২৫০ মিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা) খরচ করে ৩৬০টি বিলাসবহুল বাড়ি কিনেছেন। এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

 

আল জাজিরার অনুসন্ধানী ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাইফুজ্জামান চৌধুরী যুক্তরাজ্যে ২৫০ মিলিয়ন ডলার খরচ করে ৩৬০টি বিলাসবহুল বাড়ি কিনেছেন। নিজের রিয়েল স্টেট ব্যবসাকে সম্প্রসারণ করেছেন ব্রিটেন ছাড়াও দুবাই, নিউইয়র্ক, সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়ায়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাইফুজ্জামানের বেশ ভালো সম্পর্ক ছিল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে। যা তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন। সাবেক এই ভূমিমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমার বাবা শেখ হাসিনার খুব কাছের লোক ছিলেন। আমিও তার কাছের লোক, হাসিনা আমার বস। তিনি জানেন যুক্তরাজ্যে আমার ব্যবসা আছে।’

 

আলজাজিরা জানিয়েছে, ২০১৭ সালের দিকে সাইফুজ্জামান চৌধুরী সম্পদ কেনা বাড়িয়ে দেন। ২০১৯ সালে যখন তিনি মন্ত্রী হন তখন এটি আরও বেড়ে যায়। সংবাদমাধ্যমটি জানায়, গত বছর বিনিয়োগকারীর ছদ্মবেশে আল জাজিরার সাংবাদিক সাইফুজ্জামানের ১৪ মিলিয়ন ডলারের বাড়িতে যায়। ওই সময় ‘ছদ্মবেশী’ সাংবাদিকদের সাইফুজ্জামান বড়াই করে জানান, তিনি কুমিরের চামড়ার হাতে তৈরি জুতার ওপর হাজার হাজার ডলার খরচ করেন এবং লন্ডনের সবচেয়ে দামি দোকান থেকে ইতালিয়ান স্যুট তৈরি করে পরেন।

 

এ সময় সাইফুজ্জান লন্ডনের নিজের বাড়িও ঘুরিয়ে দেখান তাকে। যেটিতে রয়েছে সিনেমা হল, জিম, ব্যক্তিগত এলিভেটর এবং নতুন রোলস রয়েলস গাড়ি রাখার নিরাপদ আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিং এরিয়া। সাইফুজ্জামান আল জাজিরার কাছে দাবি করেছেন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও আরব আমিরাতে নিজের বৈধ ব্যবসার মাধ্যমে এই সম্পদ কিনেছেন তিনি। তবে অন্তর্বর্তী সরকার তার বিরুদ্ধে এখন অর্থপাচারের অভিযোগ এনে তদন্ত শুরু করেছে। ইতোমধ্যে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ এবং তার পরিবারের মালিকানাধীন ইউসিবিএল ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।

 

আল জাজিরার ইউটিউব অ্যাকাউন্ট ও ওয়েবসাইটে সাইফুজ্জামানকে নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, সাইফুজ্জামান চৌধুরী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী। তিনি দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সংসদ সদস্য। সাইফুজ্জামান চৌধুরী মূলত তার বাবার মাধ্যমে রাজনীতিতে সক্রিয় হন। তার বাবা চট্টগ্রামের আনোয়ারা আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন। বাবা মারা যাওয়ার পর ওই আসনে উপনির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। এরপর ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবার নির্বাচিত হন।

 

সাইফুজ্জামান চৌধুরী ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের নির্বাহী কমিটি চেয়ারম্যান ছিলেন। বাংলাদেশের শিল্প প্রতিষ্ঠান আরামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি চট্টগ্রাম চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাস্ট্রির তিনবারের নির্বাচিত সভাপতি ছিলেন।

Facebook Comments Box

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক হলেন ফাহমিদা খাতুন ও রাশেদ আল তিতুমীর

‘৩৫ হাজার টাকা দিয়ে ওরে ছাড়াই নেন, না হলে আরও মারবো’

ঢাবির হলে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতাসহ আটক চার

যুবককে পিটিয়ে হত্যার দায়ে, ঢাবির ৫ শিক্ষার্থী গ্রেফতার

ভারতকে হারানোর মজার, মজা নিতে দিন: রোহিত

‘অদ্ভুত সব শর্তে’ বয়সে বড় প্রেমিকাকে নিয়ে বিয়ে করলেন এনদ্রিক

বিমানবন্দরে যাত্রীর সঙ্গে অসদাচরণ, তিন রাজস্ব কর্মকর্তা বরখাস্ত

বাংলাদেশের বিদেশি ঋণ আবার ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে

বাংলাদেশে ভারতের রপ্তানিতে বড় পতন, আগস্টে কমেছে ২৮ শতাংশ

শেয়ার কারসাজির দায়ে সাংবাদিক হাসিব হাসানকে কোটি টাকা জরিমানা

১০

যুক্তরাজ্যে ৩৬০টি বাড়ি কিনেছেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী

১১

কী ঘটেছিল টোল প্লাজায়…

১২

দেশে রাজনৈতিক সহিংসতার কোন স্থান নেই: জো বাইডেন

১৩

মিনিয়াপোলিসে এক নারীর গাড়িতে নিহত ১, আহত ৫

১৪

বাইডেন সরকারের অর্থনৈতিক পদক্ষেপ ব্যর্থ হয়েছে: স্পিকার

১৫

সালমান এফ রহমানসহ আরও ২৮ জনের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার মামলা

১৬

শেখ হাসিনার সঙ্গীদের সম্পদ তদন্তে লন্ডনের সহযোগিতা চেয়েছে ঢাকা

১৭

বাংলাদেশ-ভারত সিরিজ বর্জনের ডাক

১৮

‘ফোনে আপা আপা বলা’ আ.লীগ নেতা তানভীরকে বহিষ্কার

১৯

মিসর সফরে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন

২০