একজন রুপুভাই
যাত্রা পথে বিশেষ করে ট্রেনে পাশের সিটে বসা যাত্রী বা সামনের সিটে বসা যাত্রীর সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ হয়, রাজনীতি অর্থনীতি, সিনেমা আরো কত কি। চা, বাদাম খাওয়া হয়। এক সময় যাত্রী তার নির্ধারিত স্টেশনে নেমে যান। সেখানেই সেই সম্পর্কের ইতি।
আজ থেকে প্রায় ৩০ বছর আগে ঢাকা থেকে জয়ন্তিকা এক্সপ্রেসে পরিচয় হওয়া এক গল্পবাজ, স্বপ্নবাজ তরুণের কথা মনে পড়লো। যার প্রতিটি কথাই যেন শিক্ষনীয়, তার কথা সবাই মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনছিলো, যেন একটা সিনেমার গল্প বলছিলো। কেমন যেন একটা সম্মোহন শক্তি ছিল তার মাঝে। আজ ঠিক তেমনি এক তরুণের সাথে দেখা। যদিও এটা তার সাথে প্রথম দেখা নয়। তবুও তার সাথে প্রতিটি দেখাই যেন নতুন নতুন দ্বার উন্মোচন করে। বলছিলাম আমাদের রুপুভাইয়ের কথা।
মিশিগান এসেই আ্মাকে একটা ফোন দিবেন, দাদা চলে এসেছি। ফোনটা পেলেই মনে হয় ভাল একটা জমানো আড্ডা হবে। অনর্গল কথা বলতে পারেন। সিলেটের রাজনীতির কথা, সংস্কৃতির কথা, গানের কথা, ভাটির দেশের মানুষের কথা, মাটির কথা। তার কথায় আমি বাংলার কাঁচা মাটির গন্ধ পাই।তার গল্পে একটু বিরক্তি আসে না, অনেকে কথা বললে কেউ শুনে, কেউ ফোন টিপে কিন্তু রুপুভাইয়ের গল্পে কি যেন যাদু মেশানো। এক গল্প থেকে অন্য গল্পে চলে যান শ্রোতা একটুও টের পায় না। গল্পের মধ্যে গল্প সৃষ্টি করতে পারেন। গল্পের যাদুকর যেন।
গতকাল মিশিগানের সাংবাদিকদের সাথে রুপুভাই একটা জমজমাট আড্ডা দিয়েছেন। তার বিভিন্ন গল্প শুনে আমরা সমৃদ্ধ হলাম। সেগুলো অবশ্য ঐতিহাসিক সত্য গল্প। আমাদের রুপুভাই একাধারে লেখক, কবি, সাংবাদিক, গীতিকার, সাংস্কৃতিক সংগঠক। রুপুভাই বারবার মিশিগান আসুন, আমরা আপনার গল্প শুনে মুগ্ধ হই। নতুন প্রজন্ম জানুক আমাদের অতীত ইতিহাস। আমরা যে বর্তমানে দাড়িয়ে আছি সেই বর্তমান সময়কে বুঝতে হলে অতীতকে জানতে হবে।অতীতকে জানতে হলে আমাদের প্রয়োজন আপনার মতো নাবিক দিশারী বাতিঘর। ভাল থাকবেন রুপুভাই।