চীনের গণবিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে দু’দিনব্যাপী ‘এশীয় মানবাধিকার ফোরাম: পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও মানবাধিকার’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সেমিনার রোববার শেষ হয়েছে।
ফোরামে গত এক দশকে এশীয় দেশগুলোতে পরিবেশ ও মানবাধিকার সুরক্ষার অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হয় এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে, মানবাধিকারের দৃষ্টিকোণ থেকে, পরিবেশগত অধিকার ও উপলব্ধি নিয়ে আলোচনা করা হয়।
এশিয়ার ২০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলের বিশেষজ্ঞ ও পণ্ডিতরা এই ফোরামে অংশ নেন।
চীনের গণবিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান লিন শাং লি তাঁর বক্তব্যে বলেন, নতুন সময়পর্ব ও নতুন যাত্রায় চীন কেবল যে মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি ঘটিয়েছে ও জনগণের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা জোরদার করেছে, তা নয়, বরং বিশ্ব মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নয়নে চীনা বুদ্ধি ও অভিজ্ঞতা সরবরাহ করেছে।
আন্তর্জাতিক নারী সংস্থা ও ইউনেস্কোসহ আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং এশিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও বৈজ্ঞানিক সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা গভীরতর করতে চীনের গণবিশ্ববিদ্যালয় ইচ্ছুক।
চীনের জাতীয় রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের চেয়ারম্যান, জাতি ও ধর্মীয় কমিটির উপ-মহাপরিচালক এবং চীনের মানবাধিকার গবেষণা সমিতির স্থায়ী কমিটির উপ-মহাপরিচালক চিয়াং চিয়ান কুও সেমিনারে বলেন, এশীয় মানবাধিকার বিনিময় ও সহযোগিতার ক্ষেত্রে উপযুক্ত ঐতিহ্য এবং দৃঢ় মতৈক্যের ভিত্তি রয়েছে।
আমাদের অবশ্যই শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য একটি দৃঢ় ভিত্তি তৈরি করতে হবে, অভিন্ন উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে হবে, এবং পারস্পরিক সম্মানের নীতি সমুন্নত রাখতে হবে, সমান বিনিময়কে জোরদার করতে হবে, সংলাপ ও সহযোগিতার ধারণাকে মেনে চলতে হবে, ন্যায্যতা ও ন্যায়বিচার বজায় রাখতে হবে।
আমাদেরকে সবুজ ও নিম্নকার্বন-উন্নয়নের পথে হাঁটতে হবে এবং একটি পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর এশিয়া গড়ে তুলতে হবে।
ইউনেস্কোর উত্তর-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের প্রতিনিধি জিয়াজেহান, ‘পরিবেশ সুরক্ষা অধিকারসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সহযোগিতাব্যবস্থা’ শীর্ষক মূল প্রতিপাদ্য নিয়ে বিশ্বে, বিশেষ করে উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় ইউনেস্কো কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন। এতে পরিবেশের অধিকারকে মানবাধিকারের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
পাশাপাশি, তিনি জোর দিয়ে বলেন, অবিরাম উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন এজেন্ডার ভিত্তিতে দূষণমুক্ত পরিবেশ ও জ্বালানি উন্নয়ন করতে হবে এবং পরিবেশ ও অবিরাম উন্নয়ন শিক্ষা ও পেশাগত প্রযুক্তিশিক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে।
‘সুন্দর চীন প্রতিষ্ঠাকাজের’ ভূয়সী প্রশংসাও করেছেন তিনি।
চীনের ‘নানখ্যাই’ বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবাধিকার গবেষণাকেন্দ্রের পরিচালক ও অধ্যাপক ছাংচিয়ান ‘এশীয় দেশগুলোতে মানবাধিকার ঐক্যমত্য গড়ে তোলার বাস্তব সুযোগ’ শীর্ষক মূল প্রতিপাদ্য নিয়ে কথা বলেন এবং এশিয় দেশগুলোর মধ্যে মানবাধিকার প্রশ্নে ঐকমত্য গড়ে তোলার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন।
তিনি বলেন, মানবাধিকার বিষয়ে ঐক্যমত্য গড়ে তোলার জন্য ধর্মবিশ্বাস, রাজনৈতিক ব্যবস্থা, এবং সামাজিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিদ্যমান মতভেদসহ সংশ্লিষ্ট বাধা নির্মূল করতে হবে।
এবারের ফোরামে ‘পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও মানবাধিকার’ এই মূল্য প্রতিপাদ্য নিয়ে এশিয়ান দৃষ্টিকোণ থেকে মানবাধিকারের ধারণা, পরিবেশগত অধিকারের মৌলিক তত্ত্ব, এশিয়ার বিভিন্ন দেশের পরিবেশগত অধিকারবিষয়ক অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হয়।
অংশগ্রহণকারীরা মূল্য প্রতিপাদ্য নিয়ে গভীরভাবে মতবিনিময় করেন।
(ওয়াং হাইমান ঊর্মি, সাংবাদিক, বাংলা বিভাগ, চায়না মিডিয়া গ্রুপ, বেইজিং, চীন।)
আরও পড়ুনঃ ন্যাটোকে তার ভৌগলিক আওতায় কাজ করার আহ্বান চীনের
মন্তব্য করুন