আহমেদ নাজার নামে একজন ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও নাট্যকার আল–জাজিরায় প্রকাশিত একটি নিবন্ধে দাবি করেছেন, ইসরায়েল গাজায় ‘ভাড়াটে অস্ত্রধারী গুন্ডা বাহিনী’ মোতায়েন করছে, যারা মানবিক ত্রাণ লুটে যাচ্ছে এবং সাধারণ মানুষের উপর হামলা চালাচ্ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, এই বাহিনীর এক নেতা ‘ইয়াসের আবু শাবাব’ নামে পরিচিত, যিনি উগ্রপন্থী নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত এবং নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই বিষয়ে বলেন, “এতে কোনো সমস্যা নেই, এতে আমাদের সেনাদের জীবন বাঁচে”। তবে বিশ্লেষকরা মনে করেন, এটি কোনো কৌশলগত প্রক্রিয়া নয়, বরং এটি ইসরায়েলের উদ্দেশ্য, ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর মনোবল ভেঙে দেওয়া, এবং তাদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করা।
কলামে উল্লেখ আছে, ১৯৮০-এর দশকে এই কৌশলের সূচনা হয়েছিল, ধর্মীয় দলগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে, যাতে ফিলিস্তিনি ঐক্য ভেঙে যায় । নিবন্ধে আরো অভিমত ব্যক্ত করা হয়, সংযোগ করে যে, ক্ষুধা ও সহিংসতা দিয়ে ইসরায়েল এমন একটি পরিবেশ তৈরি করছে, যেখানে ফিলিস্তিনিরা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে অক্ষম, এরপর ‘হাসপাতালীয় ভুল’ বা ‘বেঁধে দেওয়া অবরুদ্ধতা’ নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে দায় চাপানো হয় ।
জাতিসংঘ ও পশ্চিমা গণমাধ্যম এখনও এমন কোনো প্রমাণ ফুঁড়েছে না যে, হামাস মানবিক ত্রাণ লুট করছে । অথচ দীর্ঘ সময় ধরে এই অভিযোগকে ইসরায়েল ন্যায্যতা হিসেবে ব্যবহার করছে, মানবিক ট্রাকে বাধা দেওয়া এবং খাদ্য সরবরাহ ব্যাহত করার আড়ালে ।
বিশ্লেষক নাজার লিখে চলেছেন: “এটা শুধু নৃশংসতা নয়, এটা অত্যন্ত হিসাব‑নিকাশ করে করা কৌশল” । তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ ধারাবাহিকভাবে ফিলিস্তিনি নেতৃত্বকে দুর্বল করছে, পশ্চিম তীরেও ইহুদি বসতি সম্প্রসারণ করে ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কার্যক্ষমতা ধ্বংস করছে ।
উপসংহারে, বিশ্লেষকরা মনে করেন, ইসরায়েল শুধু হামাসকে পরাস্ত করছে না, একই সাথে গাজার দীর্ঘমেয়াদি অবরুদ্ধতা ও সহিংসতার মাধ্যমে সেখানে সাধারণ মানুষের জন্য অবস্থা নিয়ন্ত্রণহীন করে তুলছে যাতে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক নির্ভরযোগ্যতা তৈরি হয় ।
মন্তব্য করুন