ভারতের চন্দ্রজয়, আমাদের কবে?
প্রচেষ্টা চলছে বেশ কয়েক ধরে, অবশেষে চন্দ্র অভিযানে সফল হলো ভারত। ভারতসহ এখন পর্যন্ত মাত্র চারটি দেশ চাঁদের পৃষ্ঠ জয় করতে পেরেছে। তবে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটি ছাড়া অন্য তিন দেশ যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীন চাঁদের উত্তর মেরু জয় করছে। তাই দক্ষিণ মেরুর রহস্য ছিল অনাবিষ্কৃত। সব শঙ্কা কাটিয়ে প্রথমবারের মতো চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ভারতীয় সময় (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টা ৪ মিনিটে সফলভাবে অবতরণ করেছে চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার বিক্রম। চাঁদের বুকে সফলভাবে অবতরণে ভারতের ১৪০ কোটি মানুষের সঙ্গে পুরো বিশ্বের বিজ্ঞান প্রিয় মানুষের মনে বইছে আনন্দের জোয়ার। গত ১৪ জুলাই ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশকেন্দ্র থেকে চন্দ্রযান-৩ উৎক্ষেপণ করা হয়। চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডারের নাম বিক্রম। আর বিক্রম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে চার চাকাযুক্ত যে বিশেষ যান বা রোভারটি চাঁদের পৃষ্ঠে ভ্রমণ ও পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাবে তার নাম প্রজ্ঞা।
ভারতে যেকোনো পূর্ণদৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র বানাতে যে খরচ পড়ে, তারচেয়েও অনেক কম খরচে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে এই নভোযান পাঠিয়ে দিয়েছে দেশটি! ভারতীয় রুপিতে সংখ্যাটা ৬১৫ কোটি, মার্কিন ডলারে ৭৪.৬ মিলিয়ন। ১০০ মিলিয়নের নিচে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বানানো কঠিনই বটে! কাজেই বিষয়টা যে ঘটা করে উদযাপন করার মতো, তা বলা বাহুল্য! এই অর্জন বিজ্ঞান ও মহাকাশ প্রযুক্তি খাতে অগ্রসর হওয়ার ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশের জন্য অত্যন্ত গর্বের এবং অনুপ্রেরণার বিষয়। চন্দ্রযান-৩ চাঁদের দক্ষিণ মেরুর রহস্য উন্মোচন করবে বলে আশা করছেন গোটা পৃথিবীর মহাকাশ বিজ্ঞানীরা।
পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত নিয়ে যখন-তখন উদাহরণ দিয়ে থাকেন বাংলাদেশের রাজনীতিবিদরা। এবার তবে থামুক ওসব বরং চন্দ্রজয়ের স্বপ্ন দেখা শুরু হোক। স্বপ্নের বাস্তবায়ন আজ না হোক কাল হবেই। ফাঁকা বুলির আওয়াজ বন্ধ হোক, শুরু হোক জ্ঞানের রাজ্যে বিচরণ। এই শতাব্দী জ্ঞানের-বিজ্ঞানের-প্রযুক্তির, সুতরাং সম্মুখপানে এখন এগিয়ে চলার পালা।