মিশিগানে গাড়ি শিল্পের ধর্মঘটী শ্রমিকদের পিকেটিংয়ে যোগ দিলেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ইতিহাসে এই প্রথম কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট সরাসরি আন্দোলনরত শ্রমিকদের পিকেটিংয়ে অংশ নিলেন।
ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় ফ্র্যাঙ্কলিন রুজ?ভেল্ট, হ্যারি ট্রুম্যানও ট্রেড ইউনিয়নদরদী ছিলেন, কিন্তু প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন তাঁরা কখনও ধর্মঘটীদের আন্দোলনে যোগ দেননি।
পুরো দেশজুড়ে সাড়া ফেলেছে ইউনাইটেড অটো ওয়ার্কারস (ইউএডব্লিউ) নামে গাড়িশ্রমিকদের একটি ইউনিয়নের ডাকা ধর্মঘট। গাড়ি শিল্পের শ্রমিক এবং কর্মীদের এই ধর্মঘট নতুন মাত্রা পেয়েছে প্রেসিডেন্টের উপস্থিতিতে। ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পূর্বে শ্রমিক মন জয় করতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জো বাইডেন এমনটাই মনে করেন বিজ্ঞজনেরা। গাড়ি শিল্প শ্রমিকদের বিভিন্ন সংগঠনের মঞ্চ ইউএডব্লিউ’র তথ্যমতে শ্রমিকদের দাবি, মজুরি ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি করা, সপ্তাহে পূর্ণ বেতনে ৩২ ঘন্টা কাজের চুক্তি।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘একটা সময়ে প্রতিষ্ঠানগুলো সমস্যায় ছিল। এখন তারা ভালো ব্যবসা করছে। নিজেদের দাবিতে অনড় থাকুন।’
বাইডেন আরও বলেছেন, ‘‘খারাপ সময়ে গাড়ি শিল্পের শ্রমিকরা অনেক কিছু ছেড়েছেন। পেনশন বাবদ প্রাপ্য ছাড়তে রাজি হয়েছেন তাঁরা। এখন গাড়ি শিল্প ঘুরে দাঁড়িয়েছে। শ্রমিকদের অবদান রয়েছে। তাঁদের প্রাপ্য মেটানো উচিত।’’
পিকেটিংয়ে যোগ দেওয়ার পূর্বে এক্স হ্যান্ডলে বাইডেন লিখেছেন, তিনি চান, উভয়ত সুবিধা হয় মালিক এবং শ্রমিক পক্ষ এমন একটি চুক্তিতে আসুক। আমেরিকার গাড়িশিল্প এগিয়ে যাক, শ্রমিক সংগঠন ইউনাইটেড অটো ওয়ার্কার্স (ইউএডব্লিউ)-ও শ্রমিকদের জন্য উপযুক্ত বেতনের রাস্তা খুলে দিক। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের এমন স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ শ্রমিক বিদ্রোহে সৃষ্টি করলো ভিন্ন কিছু।
সচরাচর এই সকল বিষয় রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ কর্তারা এড়িয়ে যান কিংবা শিল্পপতি, ব্যবসায়ী সঙ্গ নিতেই দেখা যায় তার পরিবর্তে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সরাসরি শ্রমিকদের পক্ষ নিলেন যা মার্কিন রাজনীতিতে খুবই বড় মাপের পরিবর্তন বলা যায়।
এদিকে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানায়, মিশিগানে ৩৫০ কোটি ডলারের বিদ্যুৎচালিত গাড়ির ব্যাটারি প্লান্টের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে ফোর্ড মোটরস।
শ্রমিকদের বেতন-ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরেই আন্দোলন করছে এমন পরিস্থিতিতে ফোর্ডের সিদ্ধান্ত উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। ইউএডব্লিউর প্রেসিডেন্ট শন ফেইন ফোর্ডের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘ঘোষণাটি লজ্জাজনক।
ফোর্ডের পক্ষ থেকে এটা চাকরি ছাঁটাইয়ের হুমকি। আমরা কেবল একটি ন্যায্য পরিবর্তন চাইছি। পরিবর্তে ফোর্ড পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তুলছে।’ এ বিষয়ে ফোর্ড জানায়, ‘আমরা কাজ স্থগিত ও প্রকল্পে নির্মাণ ব্যয় সীমিত করছি। প্রতিযোগিতামূলক পরিস্থিতিতে প্লান্টটি পরিচালনা করতে সক্ষম বিবেচিত হলে আবার চালু করা হবে।’
শ্রমিক ন্যায্য দাবি অর্জিত হোক এবং আন্দোলনের অবসান ঘটুক এটাই প্রত্যাশা।