মিশিগানের ওয়ারেন সিটিতে বসবাসকারী মোঃ জাহেদ জিয়া উদ্দিন বাংলাদেশের নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর জেলা কক্সবাজারের সন্তান।
জাহেদ জিয়া ইতিমধ্যে মিশিগানে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় নিজেকে বেশ উচ্চ জায়গায় নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন।
স্ত্রী সালমা রহমান মুমু ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে একই পথের পথিক হওয়াতে অনেক জটিল বিষয়ও বেশ সহজ হয়ে উঠেছে। পরিবারে রয়েছে দুই সন্তান সাইফান (৭) এবং জাবিয়ান (৬)। ২০০৫ সালে বাংলাদেশের সিলেটে অবস্থিত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) থেকে অনার্স সম্পন্ন করে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান।
যুক্তরাষ্ট্রে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০১০ সাল থেকে মিশিগানের একটি হাইস্কুলে শিক্ষকতা দিয়ে কর্মজীবনে পা ফেলা। হ্যামট্রামিকের ওকল্যান্ড হাইস্কুলে গণিত শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীদের নিকট বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন। তিনি ২০১৭ সালের দিকে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় জড়ান, মূল লক্ষ্য ছিল। বাঙালি কমিউনিটির সেবায় ব্যবসার মধ্যদিয়ে নিজেকে যুক্ত করা।
২০১৮ সালের শেষ দিকে এ পেশায় পুরোপুরিভাবে জড়িয়ে পড়েন তিনি। এপর্যন্ত প্রতি বছর গড়ে প্রায় দুই মিলিয়ন করে রিয়েল এস্টেট বিক্রয় করেছেন। গত বছর প্রায় ৫ মিলিয়ন বিক্রয় হয়েছে। চলতি বছর ইতিমধ্যে ৫ মিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে বছর শেষ হতে এখনও কয়েকমাস বাকি তাই লক্ষ্য হচ্ছে ১০ মিলিয়ন ছাড়িয়ে যাওয়া। কাজের ক্ষেত্রে বেশকিছু সম্মাননা যুক্ত হয়েছে।
তিনি ও তাঁর স্ত্রী মিলে জিএস গ্রুপ উইলিয়াম প্রিমিয়াম এর বিক্রয় মডিউলে নাম্বার ওয়ান সম্মাননা পেয়েছেন। দুজন মিলে এক মাসে তিন মিলিয়ন করে বিক্রয় করায় এই সম্মাননা দেওয়া হয়।
কাজের ক্ষেত্রে বাধা, প্রতিকূলতার বিষয়ে জাহেদ জিয়া জানান, বাংলাদেশি রিয়েলেটর হিসেবে সবাই যে প্রতিকূলতা পায় তা হচ্ছে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে যারা উচ্চ বা একটু কম শিক্ষিত তারা মনে করেন বাঙালি রিয়েলেটর সিস্টেম সম্পর্কে জানেনা এবং তারা ইংরেজিতে ভালো কথা বলতে পারে না। তারা বাড়ি বিক্রয়ের খুঁটিনাটি সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে প্রফেশন।
পারে না। এটিই সবচেয়ে বড় বাঁধা। তবে আমরা মনে করি এটা ঠিক নয়। কারণ এখন বাঙালি কমিউনিটিতে অনেক শিক্ষিত, স্মার্ট, দক্ষ এবং সফল রিয়েলেটর রয়েছেন যাঁরা কমিউনিটির লোকজনকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এজন্য আমি সবাইকে বলবো আপনারা সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে যাচাই-বাছাই করবেন যে, সেবা নিতে যাওয়া প্রতিষ্ঠানটির সেবা দেওয়ার সক্ষমতা আছে কিনা। বাঙালি রিয়েলেটর হলেই যে ভালো না, এটা সত্যি নয়।
জাহেদ জিয়ার যাপিত জীবনে চলার পথে এপর্যন্ত পৌঁছাতে পিতা-মাতার ভূমিকাই অগ্রগণ্য। সেইসাথে ভাই-বোন আত্মীয়-স্বজনেরও রয়েছে অবদান। স্ত্রী সালমা রহমান মুমু বর্তমান সময়ে রিয়েল এস্টেট পেশায় একজন রিয়েলেটর হিসেবে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।
যারা বাড়ি ক্রয়বিক্রয় করবেন তাদের জন্য পরামর্শ দিতে গিয়ে জাহেদ জিয়া জানান, ‘কমিউনিটিতে যারা বাড়ি বিক্রয় করতে চাচ্ছেন তাদের জন্য এখন খুব ভালো সময়। এজন্য একজন সৎ, স্মার্ট এবং আপনাদের সিন্ধান্তকে সমর্থন করবে এমন রিয়েলেটরকে হায়ার করবেন। যারা বাড়ি কিনবেন তাদের জন্য এই সময়টা ভালো নয়। কারণ ইন্টারেস্ট রেট অনেক হাই, বাড়ির দাম অনেক বেশি এবং বাজারে বাড়ির সংখ্যা অনেক কম। এজন্য যদি সম্ভব হয় একটু অপেক্ষা করে দেখেশুনে আপনারা বাড়ি কিনবেন।’
রিয়েলেটর পেশায় যারা আসতে আগ্রহী তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি দেখেছি আমাদের কমিউনিটিতে অনেকেই এ পেশা শুরু করতে চাচ্ছেন। আমি সবাইকে খুব অনুরোধ করবো বিশেষ করে যারা ইয়াং জেনারেশন তারা দয়াকরে কলেজ ডিগ্রি অর্জন করবেন। এরপর মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ দক্ষতা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
সেইসাথে এই ব্যবসার খুঁটিনাটি জেনে-বুঝে শুরু করা উচিত। পরিশেষে বলবো যদি আপনি রিয়েল এস্টেট বিষয়গুলো আয়ত্বে এনে ব্যবসার সঠিক দিক বুঝতে সক্ষম হন এবং সততা ও নিষ্ঠা ধরে রাখতে পারেন তাহলে জেনে নিন- ইটস অ্যান অ্যামাইজিং প্রফেশন।’
মন্তব্য করুন