যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের পাশে আছে এবং তাদের সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্র কখনই পিছপা হবে না।
ইসরাইলে সন্ত্রাসী সংগঠন হামাসের হামলার প্রেক্ষিতে শনিবার হোয়াইট হাউজে বক্তব্য দানকালে প্রেসিডেন্ট একথা বলেন।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন তার বক্তব্যে বলেন, “আজ, ইসরাইলের জনগণ সন্ত্রাসী সংগঠন হামাস দ্বারা আক্রমণের শিকার। ট্র্যাজেডির এই মুহুর্তে, আমি তাদেরকে (ইসরাইলের জনগণকে), বিশ্ববাসীকে ও সন্ত্রাসীদের বলতে চাই যে যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের পাশে আছে। আমরা তাদের সমর্থনে কখনই পিছপা হব না। আমরা নিশ্চিত করব যে তাদের নাগরিকদের প্রয়োজনীয় সহায়তা রয়েছে এবং তারা নিজেদের রক্ষা করতে পারছে। আপনারা জানেন, বিশ্ব ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখেছে, কয়েক ঘন্টার মধ্যে হাজার হাজার রকেট ইসরাইলি শহরগুলিতে বর্ষিত হয়েছে। আমি আজ সকালে উঠার পর থেকেই এই খবর পাচ্ছি। এটি শুরু হয়েছে সাড়ে সাতটা থেকে আটটার মধ্যে। ইসরাইলে হামাস সন্ত্রাসীগোষ্ঠী শুধুমাত্র ইসরাইলি সৈন্যই নয়, ইসরাইলি বেসামরিক নাগরিকদেরও হত্যা করেছে। রাস্তায়, বাড়িতে, নিরীহ মানুষদের হত্যা ও আহত করা হচ্ছে। পুরো পরিবারকে জিম্মি করা হচ্ছে। ইহুদি ক্যালেন্ডারের পবিত্রতম দিন উদযাপন করার মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।”
শনিবার হামাস ইসরাইলের উদ্দেশে হাজার হাজার ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ে এবং দেশটির অত্যন্ত সুরক্ষিত সীমান্ত এলাকায় বেশ কয়েক ডজন সেনা পাঠিয়ে বড় আকারে পেশীশক্তি প্রদর্শন করে, যা একটি বড় ছুটির সময় ইসরাইলকে অপ্রস্তুত করে তোলে।
ইসরাইলের জরুরী সেবা সংস্থা জানায়, চিকিৎসাকর্মীরা ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে ১৬ জন হতাহতকে উদ্ধার করেছে, যার মধ্যে একজন ষাটোর্ধ বৃদ্ধা আছেন। তিনি গাজা থেকে আসা ক্ষেপণাস্ত্রের সরাসরি আঘাতে নিহত হন। এই হামলায় আহত অপর ২ ব্যক্তি আশংকাজনক অবস্থায় আছেন।
উভয় পক্ষে হতাহতের আরও খবর এসেছে। তবে কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষনিকভাবে বিস্তারিত কিছু জানায়নি। ইসরাইলি গণমাধ্যম জানায়, দক্ষিণ ইসরাইলে কয়েক ডজন মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। গাজায় অবস্থিত ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানায়, “অসংখ্য নাগরিক” আহত হয়েছেন। তবে সুনির্দিষ্ট সংখ্যা জানানো হয়নি। মসজিদগুলোতে লাউডস্পিকারে নিহত যোদ্ধাদের জন্য প্রার্থনা করা হয়।
হামাস, ইসরাইলের উদ্দেশে ২ হাজারেরও বেশ ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ে। যার ফলে এমন কী দেশটির একেবারে উত্তরে অবস্থিত তেল আবিব ও জেরুজালেমেও সার্বক্ষণিকভাবে আকাশ হামলার সতর্কতামূলক সাইরেন বাজতে থাকে। এই হামলার কারণে গাজার সুনির্দিষ্ট কিছু লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায় ইসরাইলি সামরিক বাহিনী। তারা জানায়, ইসরাইলের অন্তত ৭টি অবস্থানে হামাসের যোদ্ধারা অনুপ্রবেশ করতে পেরেছে এবং সেখানে এখন ২ পক্ষের মধ্যে বন্দুক যুদ্ধ চলছে। (হামাসের) যোদ্ধারা বেড়া ডিঙিয়ে এবং এমন কী, আকাশপথেও প্যারাগ্লাইডারের সহায়তায় ইসরাইলি ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশ করে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
অনুপ্রবেশের ঘটনা ঠেকাতে গাজা সীমান্তজুড়ে ইসরাইল একটি বড় আকারের বেড়া নির্মাণ করেছে। এটি মাটির অনেকদূর গভীর পর্যন্ত বিস্তৃত এবং এতে রয়েছে ক্যামেরা, উন্নত প্রযুক্তির সেন্সর ও সংবেদনশীল শ্রবণ প্রযুক্তি।
এমন সময় এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হলো যখন পশ্চিম তীরে বড় আকারে যুদ্ধ চলছে। এ বছর ইসরাইলি সামরিক অভিযানে প্রায় ২০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনার পর পশ্চিম তীরে অসংখ্য জঙ্গী ও এলাকার বাসিন্দা উল্লাস প্রকাশ করতে সড়কে নেমে আসেন।
মন্তব্য করুন