বিশ্ব সংবাদযুক্তরাষ্ট্র সংবাদশ্রদ্ধাঞ্জলি

বিদায় রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ, স্বাগতম রাজা তৃতীয় চার্লস

ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের ইতিহাসে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ সবচেয়ে লম্বা সময় দায়িত্ব পালন করে

বিদায় রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ, স্বাগতম রাজা তৃতীয় চার্লসছেন। সাত দশকের রাজত্বের অবসান হলো গত ৮ সেপ্টেম্বর তারিখে। তিনি স্কটল্যান্ডের বালমোরাল প্রাসাদে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিলো ৯৬ বছর। তাঁর মৃত্যুত গভীর শোক প্রকাশ করছি। মাত্র ২৫ বছর বয়সে ব্রিটিশ রাজত্বের দায়িত্ব নিয়েছিলেন রানি দ্বিতীয়

এলিজাবেথ। তিনি ৭০ বছর রাজকার্য পরিচালনা করে অনন্য ইতিহাস গড়েন। আমার শিক্ষাজীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়ের সঙ্গে মিশে আছে যুক্তরাজ্য। রানির শাসনামলে ইংল্যান্ডের লন্ডনে বসবাসের ফলে এবং মিডিয়া সংশ্লিষ্টতার সূত্র ধরে রানির দৃঢ়তা খুব কাছ থেকে দেখা হয়েছে। রানির বিদায়ে ব্রিটিশ রাজত্ব একটা বড় ধরণের ধাক্কা খাবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। ব্রাডফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে পড়াকালীন সময়ে ব্রিটিশ সরকারের উচ্চপর্যায়ের লোকজনের সঙ্গে পরিচয় বাড়ে এবং সেই সুযোগটি তৈরি করে দেন সদ্যপ্রয়াত কিংবদন্তি আবদুল গাফফার চৌধুরী। ব্রিটিশদের সঙ্গে মিশে যাওয়ায় বুঝতে সুবিধা হয় তাঁর মন-মানসিকতা। খাঁটি ব্রিটিশদের মধ্যে একটি বিষয় খুব লক্ষ্য করে দেখি সেটি হচ্ছে রানির প্রতি তাঁদের অগাধ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। যুগ যুগ ধরে চলমান রাজত্বের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছেন প্রায় সকলেই। গত কয়েক দশকে ব্রিটেনের অনেক রাজনীতিবিদের মধ্যে রাজতন্ত্রের প্রতি দৃঢ় আস্থার জায়গাটি কমেছে। এখন রানির মৃত্যুতে সেটা কোন দিকে যায় এ বিষয়টি বোঝা অনেক জটিল। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর তাঁর বড় ছেলে ৭৩ বছর বয়সী চার্লস ফিলিপ আর্থার জর্জ নতুন রাজা হয়েছেন। স্বাগত জানাই গ্রেট ব্রিটেনের নতুন রাজাকে। রাজা তৃতীয় চার্লস এখন ৫৬টি স্বাধীন রাষ্ট্র ও ২৪০ কোটি মানুষের সংগঠন কমনওয়েলথের প্রধান হয়েছেন। এর মধ্যে যুক্তরাজ্যসহ ১৪টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান হলেন রাজা। এসব দেশগুলো হলো অস্ট্রেলিয়া, অ্যান্টিগা ও বারবুডা, বাহামা, বেলিজ, কানাডা, গ্রেনাডা, জ্যামাইকা, পাপুয়া নিউ গিনি, সেন্ট ক্রিস্টোফার অ্যান্ড নেভিস, সেন্ট লুসিয়া, সেন্ট ভিনসেন্ট অ্যান্ড গ্রেনাডাইনস, নিউজিল্যান্ড, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ এবং টুভালু।
রাজা তৃতীয় চার্লসের প্রথম স্ত্রী প্রিন্সেস ডায়ানার মৃত্যুর বিষয়টি এখনও নানা রহস্যে ঢেকে আছে এবং প্যারিসে সেই দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া ব্রিটেনের মানুষের হৃদয়ের রানি প্রিন্সেস ডায়ানার মৃত্যুর পর প্রিন্স চার্লসের প্রতি কিছুটা বিরক্তি রয়েছে অজস্র ব্রিটিশ নাগরিকের। সময়ের পরিক্রমায় তিনি এখন ব্রিটেনের রাজা। মূলত তিনি যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রপ্রধান। তবে তার ক্ষমতা অনেকটাই প্রতীকী ও আনুষ্ঠানিক এবং তিনি রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষতা অবলম্বন করেন। নতুন রাজা বহু সংস্কৃতির, বহু বিশ্বাসের ব্রিটেনের মানুষের কাছে কতটুকু নিজের গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করতে পারবেন এটিই এখন দেখার বিষয়।

Back to top button