লাইফ স্টাইল

বজ্রপাতের নিজেকে সুরুক্ষিত রাখতে করণীয়

চলছে বৈশাখ মাস, আর বৈশাখ মাসে ঝড় বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত অনেক বেড়ে যায়। আর বজ্রপাতের কারণে প্রাণহানিসহ জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। বজ্রপাত থেকে রক্ষ পেতে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দিয়েছেন

  • যখনই বজ্রঝড় শুরু হবে তখন বাইরে অবস্থান করবেন না। বজ্রপাত চলাকালীন সময়ে পারলে ঘরে থাকুন। আর যদি ঘরের বাইরেও থাকেন তাহলে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে হবে।
  • বজ্রঝড় হওয়ার সম্ভবনা সাধারনত গভীর ও উলম্ব আকৃতির মেঘ দেখলেই বুঝা যায়। যদি জরুরি প্রয়োজন থাকে তবে রাবারের জুতো পরে বাইরে যাওয়া ভালো।
  • বজ্রঝড়ের সময় গ্রামে অবস্থান করলে পায়ের আঙুলে ভর দিয়ে দাঁড়ান। তারপর কানে আঙুল দিয়ে মাথা নিচু করে বসুন। বজ্রপাতের সময় এভাবে নিজেকে নিরাপদ রাখারে এই চেষ্টা আগে থেকেই প্রচলিত।
  • আপনার ভবনে যদি বজ্রপাত নিরোধক ব্যবস্থা না থাকে তাহলে বজ্রঝড়ের সময় সবাই আলাদা আলাদা কক্ষে বিচ্ছিন্নভাবে অবস্থান করুন।
  • বজ্রপাতে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে যদি আক্রান্ত হন তাহলে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। অনেকের ধারণা বজ্রপাতে আক্রান্ত ব্যাক্তি তাৎক্ষণিকভাবে মারা যান আসলে ব্যাপারটা এমন না। তাই দ্রুত নিকটস্থ চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যান। বজ্রপাতে আহত হলে না ভেবেই ওই ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাস ও হৃৎস্পন্দন ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালান।

বজ্রপাতে করণীয়তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের আরও মতামত আসুন জেনে নিই

  • বজ্রপাতের সময় খোলা বা উঁচু স্থানে থাকা যাবে না। সবচেয়ে ভালো হয় কোনো পাকা দালানের নিচে আশ্রয় নেওয়া।
  • উঁচু গাছপালা বা বিদ্যুতের খুঁটিতে বজ্রপাতের সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই এসব স্থানে আশ্রয় নেবেন না যেমন খোলা স্থানে বিচ্ছিন্ন একটি যাত্রী ছাউনি, বড় গাছ কিংবা তালগাছ ইত্যাদিতে বজ্রপাত হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত বেশি থাকে।
  • বজ্রপাতের সময় বাড়িতে থাকলে জানালার কাছাকাছি না থাকা ভালো। ঘরের জানালা বন্ধ করে ঘরের ভেতর থাকুন।
  • বজ্রপাত ও ঝড়ের সময় বাড়ির ধাতব পদার্থ, সিঁড়ির রেলিং, পাইপ ইত্যাদি স্পর্শ করবেন না। এমনকি ল্যান্ড লাইন টেলিফোনও স্পর্শ করবেন না।
    বজ্রপাতের সময় বৈদ্যুতিক সংযোগযুক্ত সব যন্ত্রপাতি স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন যেমন টিভি, ফ্রিজ ইত্যাদি । এগুলো এমনকি বন্ধ করা থাকলেও ধরবেন না। বজ্রপাতের পূর্বাবাস জানা মাত্রই বৈদ্যুতিক সংযোগযুক্ত সব যন্ত্রপাতির প্লাগ খুলে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করুন।
  • বজ্রপাতের সময় গাড়ির ভেতরে থাকলে সম্ভব হলে গাড়িটি কোনো কংক্রিটের ছাউনির নিচে দাড় করান। গাড়ির ভেতরের ধাতব বস্তু স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন। গাড়ির কাচেও হাত দেবেন না।
  • এমন কোনো স্থানে যাবেন না, যে স্থানে আপনিই উঁচু। বজ্রপাতের সময় ধানক্ষেত বা বড় মাঠে থাকলে তাড়াতাড়ি নিচু হয়ে যান। বাড়ির ছাদ কিংবা উঁচু কোনো স্থানে থাকলে দ্রুত সেখান থেকে নেমে যান।
  • বজ্রপাতের সময় আপনি যদি পুকুরে সাঁতার কাটেন কিংবা জলাবদ্ধ স্থানে থাকেন তাহলে সেখান থেকে সরে পড়ুন। কারণ পানি খুব বেশি বিদ্যুৎ পরিবাহী।
  • কয়েকজন মিলে খোলা কোনো স্থানে থাকাকালীন যদি বজ্রপাত শুরু হয় তাহলে প্রত্যেকে ৫০ থেকে ১০০ ফুট দূরে সরে যান।
    যদি বজ্রপাত হওয়ার উপক্রম হয় তাহলে কানে আঙুল দিয়ে নিচু হয়ে বসে চোখ বন্ধ রাখুন। কিন্তু মাটিতে শুয়ে পড়বেন না কারণ মাটিতে শুয়ে পড়লে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে।
  • আপনার ওপরে বা আশপাশে বজ্রপাত হওয়ার আগের মুহূর্তে কয়েকটি লক্ষণে তা বোঝা যেতে পারে। যেমন বিদ্যুতের প্রভাবে আপনার চুল খাড়া হয়ে যাবে, ত্বক শিরশির করবে বা বিদ্যুৎ অনুভূত হবে। এ সময় আশপাশের ধাতব পদার্থ কাঁপতে পারে। এমন পরিস্থিতি অনুভব করলে দ্রুত বজ্রপাত হওয়ার প্রস্তুতি নিন।
  • আপনার বাড়িকে বজ্রপাত থেকে নিরাপদ রাখতে আর্থিং সংযুক্ত রড বাড়িতে স্থাপন করতে হবে।

Back to top button