সাহিত্য
চলমান

কবি ফজলুল হকের কবিতা

সকলে জানে না

তোমার বসন্তের জন্য কিছু-কিছু
অপ্রতিসাম্যের মূর্তি এঁকে রেখে চলে যাচ্ছি
পুষ্প ও ফুলের দূরত্বে বিশাল বাংলাদেশ,
এই দেশে ব্রাত্যজনের স্বপ্নও বিশাল।

সকলে জানে না মেঘনার বুকের পড়শী যে বুক,
গঙ্গার ঢেউয়ের মত শুধু সে-ই জানে
আসন্ন বসন্তদিন।
চুড়ির টুকরোর মত কয়েকটি কাঁচের সন্ধ্যা
তোমার চিবুকে রইল ধ্রুবক।

অসম্মত বসন্তদিনে, চিহ্নসাম্যে বাংলাদেশের কথা
গান হয়ে এলে দেখে নিও,
ফেলে যাওয়া ছবির দুরূহ পথের কষ্ট কিংবা
লুকোনো ঈর্ষার অঙ্গার,
মানবরেখার মত পরিত্যক্ত আমারই স্পন্দন।

কে বলে গো, সেই প্রভাতে নেই আমি

একদিন বসন্তের হঠাৎ হাওয়ায় শিমুল তুলোর ওড়াওড়ি দেখতে দেখতে
তিরিশ মাইলের পথ পেরিয়ে কবি এসে নামে, কদমতলায়।

ক্বীনব্রীজের দু’পার ছাপিয়ে তখনও অজস্র জনতার চলা।
গলির ধারে ভাঙ্গা কোন এক বাড়ির পাশে বুক-ভাঙা ডানা ভাঙা কবি
শীত-ঠকঠক কাঁপতে কাঁপতে পথ খুঁজে।

দেখে, এবার পথ গেছে পণাতীর্থের দিকে।
তার পরের পথটুকুই ইতিহাস।
তখন কবিতা নদীর দুঃখের মতো
নিরন্তর ভাঙতে ভাঙতে নির্জনতার অভিসারী।

কখনও আরুণি-উদ্বালক কিংবা রুমীর মমতায়
সেই থেকে কবিতার দিকে নিরন্তর ছুটে চলা।
অতঃপর বোধের অতীত এক সারস্বত সত্য-নাম
কবিতার তীর্থে এসে প্রতিটি জন্মের দিনে জানায়:

“কে বলে গো, সেই প্রভাতে নেই আমি”।

Back to top button