ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হোক সকলের জীবন
‘ওরে হত্যা নয় আজ সত্যাগ্রহ শক্তির উদ্বোধন।’ কবি নজরুল রচিত এমন অনবদ্য সত্য আজকাল আমাদের কোরবানিতে লক্ষ্য করা যায় না বরং সত্যাগ্রহ শক্তির উদ্বোধনের চেয়ে ভোগের উন্মাদনা ব্যাপকহারে বেড়েছে।
ইসলামী বিধান মতে কোরবানি করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ ও তাৎপর্যমণ্ডিত ইবাদত। এতে আত্মত্যাগের মহিমা উদ্ভাসিত হয়। আদি পিতা হযরত আদম (আ.)-এর দুই পুত্র হাবিল ও কাবিল থেকে শুরু হওয়া এই কোরবানির ইতিহাস আজও ত্যাগের প্রেরণা দেয়। মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইব্রাহিম (আ.) তাঁর শিশুপুত্র ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানি করার মধ্যদিয়ে চলমান ধারাকে মহিমান্বিত করেন যা কিয়ামত পর্যন্ত অম্লান থাকবে।
মুসলমানরা তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী ত্যাগ ও আত্মোৎসর্গের প্রতীক হিসেবে পশু কোরবানি দিয়ে আসছেন। পরিতাপের বিষয়, বর্তমানে ধর্মের মতো আধ্যাত্মিক একটি বিষয়ও পরিণত হয়েছে লোক দেখানো কর্মে। প্রতিযোগিতা করে মাংস খাওয়া এবং মাসের পর মাস ডিপফ্রিজে জমিয়ে রাখা আমাদের কালচারে পরিণত হয়েছে। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
মনে রাখতে হবে মহান আল্লাহ তায়ালার নিকট কোরবানি করা পশুর রক্ত বা মাংস কিছুই পৌঁছায় না, শুধু পৌঁছায় বান্দার তাকওয়া। কাজেই কোরবানি কোনো লোক দেখানো বা প্রতিযোগিতার বিষয় নয়।
ত্যাগ ও আত্মোৎসর্গের পথ ধরে লাভ করা যায় আল্লাহর নৈকট্য। তাই কোরবানি হোক ধর্মের রীতিনীতি মেনে, ভোগ নয় বরং ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হোক সকলের জীবন।