বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

ম্যালওয়্যার কি এবং কম্পিউটার ম্যালওয়্যার দ্বারা আক্রান্ত হলে যা করবেন !

ম্যালওয়্যার আসলে এক ধরণের Malicious Software যা কম্পিউটার, মোবাইল বা বিভিন্ন ডিভাইসগুলোর জন্য ক্ষতিকারক এক ধরনের প্রোগ্রাম। এটি  ব্যবহারকারীর কোন ভুলত্রুটি কারণে কম্পিউটারে প্রবেশ করে কম্পিউটারকে স্লো করে দেয় করে দেয় এমনকি মাঝে মাঝে হার্ডডিস্ককে নষ্ট করে দিতেও সক্ষম।

ম্যালওয়্যার কত প্রকার এবং কিভাবে কাজ করে?
ম্যালওয়্যার হতে পারে বিভিন্ন প্রকারের যেমন– ট্রোজান (Trojans), ভাইরাস (Virus), ওয়ার্ম (Worms), এডওয়্যার (Adware) এবং স্পাইওয়্যার (Spyware)।

নিচে আলোচনা করা হল সব ধরণের ম্যালওয়্যার নিয়েঃ

ট্রোজান (Trojans)
ট্রোজান (Trojans)- ম্যালওয়্যারের নামকরণ Trojan Horse থেকে করা হয়। ট্রোজান (Trojans) এমন এক ধরণের Malicious Computer Program যা দেখতে অনেকটা আমাদের সাধারণ স্ফটওয়্যারের মতই। এটি কম্পিউটারে লুকিয়ে থেকে ব্যবহারকারীকে ইন্সটল করাতে বাধ্য করে।

স্পাইওয়্যার (Spyware)
স্পাইওয়্যার (Spyware) এটিও একটি ম্যালওয়্যার। যার কাজই হলো ব্যবহারকারীকে না জানিয়ে লুকিয়ে তার সকল ইনফরমেশন সংগ্রহ করে হ্যাকারের কাছে তুলে দেওয়া। যদিও বেশিরভাগ স্পাইওয়্যার (Spyware) বেশি ক্ষতিকারক না হলেও কিছু এমন স্পাইওয়্যার আছে যা ট্রোজান (Trojans) এর চেয়েও বেশ ক্ষতিকারক। এসকল স্পাইওয়্যার আপনার সকল ইমেজ, ফাইল ডাটা অন্য ব্যবহারকারীর কাছে দিয়ে দেয়।

ওয়ার্ম (Worms)
Worms এমন ধরণের ম্যালওয়্যার যা অন্যান্য ম্যালওয়্যার গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মারাক্তক। Worms দ্বারা আক্রান্ত কোন ফাইল ইমেইল বা ইন্টারেনট হোস্টিংয়ের মাধ্যমে অন্য কম্পিউটারে স্থানান্তর করা হলে সেই কম্পিউটারের পাশাপাশি তার নেটওয়ার্ক সিস্টেমেও সিকিউরিটিতেও সমস্য সৃষ্টি করে, যা আপনার কম্পিউটারকে স্লো করে দেয়, এমনকি মাঝে মাঝে হার্ডডিস্ক পর্যন্ত নষ্ট করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।

ভাইরাস (Virus)
ভাইরাস অন্যতম একটি ক্ষতিকারক Program যা অন্য কোন স্ফটওয়্যারের মাধ্যমে কম্পিউটারে প্রবেশ করে এবং কম্পিটারের সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি বা ফাইল নষ্ট করে দেয়। যার ফলে ফাইলগুলো পরবর্তীতে ব্যবহারযোগ্য থাকে না।

এডওয়্যার (Adware)
এটি সাধারনত ইন্টারনেট থেকে কোন কিছু ডাউনলোড করার মাধ্যমে কম্পিউটারে প্রবেশ করে। যা কম্পিউটারকে স্লো করে দেয় এমনকি হার্ডডিস্ক নষ্ট করে দিতে পারে।

কম্পিউটারকে ম্যালওয়্যারমুক্ত রাখতে কি করতে হবে?
আপনার কম্পিউটারকে ম্যালওয়্যার মুক্ত রাখতে চাইলে একটি ভালোমানের এন্টি-ম্যালওয়্যার বা এন্টিভা্ইরাস ব্যবহার করতে হবে। ভালো মানের এন্টিভাইরাস বাজারে পাওয়া যায় অথবা চাইলে এন্টিভাইরাসের নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকেও কিনে ব্যবহার করা যায়।

বর্তমানে এন্টিভাইরাসের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অবস্থানে আছে Windows Defender For Endpoint, BitDefender, AVG Antivirus, Avast Antivirus, Mcafee Antivirus, Kaspersky Antivirus, Norton 360, ESET NOD32 Antivirus, Trend Micro Antivirus+ Security ইত্যাদি। উইন্ডোজ 10 / 11 ব্যবহারকারীরা ফ্রিতে Windows Defender ব্যবহার করতে পারছেন যা উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের সাথে ফ্রিতে দেওয়া থাকে। ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য  Windows Defender ব্যবহার করতে পারবেন কিন্তু তারপরে চাইলে অন্যান্য এন্টিভাইরাস ব্যবহারও করতে পারবেন।

ভালো এন্টিভাইরাস চেনার উপায়?
ভালো এন্টিভাইরাস কেনার আগে অবশ্যই কিছু বিষয় মাথায় রেখে কিনতে হয়। কারণ সকল এন্টিভাইরাস এক রকম কাজ করে না আবার সকল ফিচারও দিয়ে থাকে না। তাই কেনার আগে কিছু বিশেষত্ব বা বৈশিষ্ট্য বিচার করে কিনতে হয়।

সনাক্তকরণ ক্ষমতা (Detection Capabilities)
ডিকেশন ক্যাপবিলিটিস বা সনাক্তকরণ ক্ষমতা কত সেটা দেখা দরকার। কারণ একটি এন্টিভাইরাস যদি ম্যালওয়্যার সনাক্ত করতে অক্ষম হয় তাহলে কম্পিউটারে থাকা তথ্যাদি বা ইমেজ নিরাপদ নয়।

সিস্টেমের কর্মক্ষমতা (System Performance)
সিস্টেমের কর্মক্ষমতায় যেন কোন প্রকার ক্ষতি না করে এমন এন্টিভাইরাস বাচাই করা উচিত। কেননা কাজের সময়ে সিস্টেম স্লো করে কখনোই সেটা ভালো মানের  এন্টিভাইরাসের ক্যাটাগরিতে পরবে না।

বৈশিষ্ট্য (Feature)
এন্টিভাইরাস এমন হওয়া উচিত যেন যুগোপযোগী সকল বৈশিষ্ট্য থাকা প্রয়োজন। কেননা একটি এন্টিভাইরাসের কাজ শুধু ভাইরাসমুক্ত রাখা নয় পাশাপাশি আপনার কম্পিউটারকে হ্যাকিংয়ের বিষয় থেকেও মুক্ত রাখা।

উপযুক্ত মূল্য (Value For The Money)
আপনার এন্টিভাইরাস এমন যেন না হয় যে তার কর্মক্ষমতার থেকে বেশি তার দাম হয়ে পড়ে। তাই সকল ফিচারের সাথে মিল রেখে তার দামও সঠিক হওয়া উচিত।

এন্টিভাইরাস হিসাবে সেটা একজন ব্যবহারী নির্বাচন করবেন তার জন্য কোন এন্টিভাইরাস ভালো হবে। তবে অবশ্যই এই বিষয়গুলো মাথায় রেখে এন্টিভাইরাস নির্বাচন করা জরুরি।

Back to top button