শ্রমজীবী মানুষের জয় হোক

বেঁচে থাকার প্রয়োজনে শ্রম জরুরি তাই বলে শ্রমশোষণে শ্রমিক নিষ্পেষিত হয়ে গেলে প্রতিরোধ গড়ে ওঠাই স্বাভাবিক। একজন শ্রমিক ২৪ ঘণ্টার মধ্যে টানা ১৬ ঘণ্টা বিরতিহীনভাবে কাজ করে যাবে আমেরিকায় চলমান এমন নির্মম জুলুমের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধভাবে ফুঁসে উঠেছিল শ্রমিকেরা। আমেরিকার শ্রমজীবী মানুষেরা ঐক্যবদ্ধভাবে আট ঘণ্টা শ্রমের দাবিতে শিকাগোর হে মার্কেট স্কয়ারে প্রতিবাদ সভা করে। পুলিশের গুলিতে সেই সভা শ্রমিকের রক্তে রঞ্জিত হয়।

শিকাগো শহরের এই ঘটনা সমগ্র বিশ্বে শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে আলোড়ন তোলে। আমেরিকায় ঘটে যাওয়া এই রক্তক্ষয়ী ইতিহাস বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে গড়ে ওঠে অসংখ্য শ্রমিকদের সংগঠন। ন্যায্য অধিকার আদায়ে শ্রমিকেরা রাজপথে নেমে আদায় করেন তাঁদের অধিকার। ফ্রান্সের প্যারিসে ১৮৮৯ সালে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে শিকাগো শ্রমিক আন্দোলনের দিনটিকে ১৮৯০ সাল থেকে পালনের প্রস্তাব দেওয়া হয়। ১৮৯১ সালে প্রস্তাবটি আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হয়।

পরবর্তীতে ১৯০৪ সালে নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে অনুষ্ঠিত সমাজতন্ত্রীদের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে দৈনিক আট ঘণ্টা কাজের সময় নির্ধারণের দাবি আদায় এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বিশ্বব্যাপী মে মাসের প্রথম দিন মিছিল ও শোভাযাত্রার আয়োজন করতে সকল দেশের শ্রমিক সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এ আহ্বানে বিশ্বের প্রায় সব শ্রমিক সংগঠন সাড়া দেয়। রক্তাক্ত পথ বেয়ে বিশ্বব্যাপী প্রতিষ্ঠা পায় শ্রমিকদের দৈনিক আট ঘণ্টা কাজ করার দাবি। সমগ্র বিশ্বের শ্রমিক সংগঠনগুলো খুব গুরুত্বের সঙ্গে দিনটি পালন করে।
আমাদের প্রত্যাশা সকল দেশেই শ্রমিকের অধিকার সুরক্ষিত হোক। শ্রমজীবী মানুষের জয় হোক।


Posted

in

by