লাইফ স্টাইলস্বাস্থ্য

রোজাতে পাকস্থলীর সমস্যা থাকলে কি করবেন

গ্যাসট্রাইটিস, আলসার ইত্যাদি অসুখ আছে এমন মানুষদের রোজায় একটু বাড়তি সতর্কতা মেনে চলা উচিত । গ্যাসট্রাইটিস হচ্ছে পাকস্থলীর গাত্রে ইনফ্লামেশন বা প্রদাহজনিত অসুখ। আর আলসার হচ্ছে পাকস্থলীর গাত্রে ঘা-বিশেষ। যাইহোক, রোজায় উভয় রোগের ক্ষেত্রেই কিছু নিয়ম মেনে চলা ভালো।

সারাদিন রোজা রেখে ইফতারের সময় অল্প পরিমাণ খেতে হবে। পেট পুরে খাওয়া যাবে না। খাবার সময় একটু বিরতি দিয়ে দিয়ে পানি পান করা উত্তম। যত হালকা খাবার খাবেন, পরিপাকতন্ত্র ততই ভালো থাকবে। মাগরিবের নামাজের পর আর তারাবির নামাজের আগেই মূল খাবার খান। রাতে আর খাওয়ার প্রয়োজন নেই। সাহরিতে অবশ্যই খাবেন। আর অবশ্যই রোজায় ঝাল, মসলাদার জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।

 

যা যা এড়িয়ে চলবেন

* এসিডিটি, আলসার, বুকজ্বলা ইত্যাদি সমস্যায় ভোগছেন যারা বা রোজা রাখলে অনুভব করেন, তারা ভাজাপোড়া, চর্বিযুক্ত খাবার, টক জাতীয় ফল যেমন – লেবু, আঙুর, কমলা ও টমেটোযুক্ত ইত্যাদি খাবার এড়িয়ে চলুন।

* অতিরিক্ত মসলাদার খাবার, টিনজাত খাবার এড়িয়ে চলুন। কৌটা বা টিনে প্রক্রিয়াজাত খাবারে সাধারণ উচ্চমাত্রার প্রিজারভেটিভ বা খাদ্য সংরক্ষক থাকে, যা এসিডিটি, বুকজ্বলা, আলসারের সমস্যার অন্যতম কারণ।

* অতিরিক্ত চিনিযুক্ত ও রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার যেমন বিস্কুট, চিপস জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন।

* সাহরি ও ইফতারে মাত্রা অতিরিক্ত খাবার খাওয়া বাদ দিন। ইফতার দ্রুত  করার চেষ্টা করেবেন ও যতটা সম্ভব দেরিতে সাহরি খাওয়ার চেষ্টা করবেন।

* সম্পুর্ণরূপে এড়িয়ে চলুন চা, কফি, কোল্ড ড্রিংকস জাতীয় খাবার।

* ধূমপানের সঙ্গে পাকস্থলীর প্রদাহ ও আলসারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। ধূমপান পুরনো আলসারের ক্ষত বাড়ায়, নতুন আলসার সৃষ্টি করে। তাই এটি পরিহার করুন।

 

যেসব খাবার খাদ্যতালিকায় রাখবেন

* আঁশযুক্ত কার্বোহাইড্রেট যেমন—লাল চাল, লাল আটা, বিট, যব ইত্যাদি। এগুলো খেলে ক্ষুধাও খুব কম অনুভূত হয়।

* ইফতারে মিষ্টি বা উচ্চ চিনিযুক্ত খাবারের পরিবর্তে খেজুর খান। কারণ খেজুরে আছে চিনি, আঁশ, কার্বোহাইড্রেট, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়ামসহ অনেক খনিজ উপাদান।

* কলা কার্বোহাইড্রেট, পটাসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের ভালো উৎস।

* তেলেভাজা খাবারের বদলে ওভেনে গ্রিল করা খাবার খান।

* সাহরিতে এক গ্লাস দুধ খেলে পাকস্থলীর প্রদাহ ও আলসারের উপসর্গ কমে যায়।

 

সর্তকতা

* খাবার চিবিয়ে খান। তাড়াহুড়া করে খাবার খাবেন না।

* সাদা চালের ভাত ও সাদা আটার তৈরি রুটি-পাউরুটি না খাওয়াই ভালো।

* পেটে গ্যাস, বারবার টক ঢেকুর ওঠা, বমি ও বমিবমি ভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া, ক্ষুধামান্দ্য, পেট ব্যথা, বুকজ্বলা, মাথা ব্যথা ইত্যাদি লক্ষণ থাকলে বুঝতে হবে পরিপাকতন্ত্রে সমস্যা হচ্ছে।

সতর্কতা অবলম্বনের পরও যদি এসিডিটি, বুকজ্বলা ইত্যাদি সমস্যা হতেই থাকে, তবে ওষুধের সাহায্য নিন। তীব্র ব্যথা, বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া, পায়খানা কালচে হওয়ার মতো লক্ষণগুলো থাকলে অবশ্যই দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

Back to top button