বাংলাদেশের রাষ্ট্র পরিচালনায় এখন তৃতীয় শক্তির প্রয়োজন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৮৩ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত যেসকল ছেলে-মেয়েরা পড়ালেখা করতেন, তাদের সিংহ ভাগই কোন না কোনভাবে স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন। সেসময়কার সবচেয়ে বড় ছাত্র সংগঠন ছিল জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। তৎকালীন সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত ছাত্র রাজনীতি এই দলের নেতৃত্বেই পরিচালিত হতো। ৯০এর গণআন্দোলনের এরশাদ সরকারের পতন, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সবচেয়ে বড় সাফল্য। এরশাদের এই পতনের রেশ ধরেই পরবর্তীতে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে অবাধ, নিরপেক্ষ ও ভোটচুরিবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ক্ষমতায় এলো বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
৯১-এ বিএনপির এই ক্ষমতাপ্রাপ্তি কার অবদান? ৭১-এ মুক্তিযোদ্ধারা যেভাবে নিঃস্বার্থভাবে যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছিল, অনেকটা এভাবেই ঢাবির ৮৩-৯০ সালের শিক্ষার্থীরা তাঁদের সফল আন্দোলনে দেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করেছিল। কিন্তু কি পেল ৮৩-৯০ এর ছাত্র-ছাত্রীরা? গুটিকয়েক সুবিধাবাদী ছাড়া সেসময়কার প্রায় ৯৮% শিক্ষার্থীরা কোনদিন কারো কাছে কিছু চায়নি, আজও চাচ্ছে না, চাওয়ার কোন ইচ্ছাও নেই। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সেই মহান নেতা, কর্মী, বিভিন্ন হলের ছাত্রদলের নির্বাহী কমিটির ছোটবড় সকল নেতাই অত্যন্ত উচ্চমানের শিক্ষার্থী ছিলেন বলে, নিজগুণেই তারা বাংলাদেশ থেকে শুরু করে বিশ্বের অনেক দেশের গুরুত্বপূর্ণ পদে চাকরি করেছেন, আজও করছেন এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল হয়েছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো বিএনপি কি কোনদিন এই সকল সাহসী ও মেধাবীদের মূল্যায়ন করেছে? আমার সৌভাগ্য আমিও সেসময়কার ছাত্রদলের একজন সক্রিয় কর্মী বা নেতা যাই বলেন না কেন, ছিলাম। এখানে যা লিখেছি, এগুলো সব আমার নিজ চোখে দেখা রাজনীতি।
ঢাবির শহীদুল্লাহ হলের একজন আবাসিক ছাত্র হিসেবে স্বচক্ষে যা দেখেছি, শুধুমাত্র তাই এখানে উল্লেখ করছি।
আজকের বিএনপির এই করুণ এবং মেধাবিহীন রাজনীতিবিদদের দেখে হতাশ হতে হয়। মনে হচ্ছে সুবিধাভোগীরা এবং মেধাবিহীন ধান্ধাবাজরা বিএনপিকে এখন ঘিরে আছে। লন্ডন থেকে যিনি বিএনপিকে পরিচালনা করছেন, তার আশপাশের লোকদেরকে দেখলে রীতিমত আতঙ্কিত হতে হয়। আমাদের দেশে একটি তৃতীয় শক্তির প্রয়োজন।
আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জামায়াত এদের সবাইকে দেখা হয়ে গেছে। নতুন বোতলে পুরাতন মদের আর দরকার নেই বরং আমাদের প্রয়োজন সৎ, সত্যিকার দেশপ্রেমিক এবং মেধাবীদের।এখন এগিয়ে যাওয়ার সময় তাই সৎ যোগ্য এবং আদর্শিক নেতা নির্বাচন খুবই জরুরি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মেধাবীদের ঐক্যবদ্ধ করতে হবে, তবে ভাংচুর আর বোমাবাজি করে নয়।
বোমাবাজি করে আমাদের মেধাবী তরুণদের হত্যা করে ক্ষমতায় যাবার কোন দুষ্ট পরিকল্পনা কারো মধ্যে থাকা উচিত নয়। এসব নেতিবাচক রাজনীতির দিন শেষ। কলম হাতে ধরতে হবে।
প্রচুর লিখতে হবে, সকল সংবাদ মাধ্যম থেকে শুরু করে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সবগুলোতে, শুধু দেশের পজিটিভ বিষয়গুলো তুলে ধরতে হবে। একজন দুজন নয়, লক্ষ লক্ষ, কোটি কোটি মেধাবীদের এসব নিয়ে লিখতে হবে। সত্যের জয় হবেই।