প্রথম বারের মত মিশিগানের দুর্গা টেম্পলে “অন্নকূট” উৎসব উদযাপিত
বিপুল উৎসাহ উদ্দিপনার মধ্য দিয়ে আমেরিকার মিশিগান অঙ্গরাজ্যের ডেট্রোয়েট দুর্গা টেম্পলে প্রথমবারের মতো “অন্নকূট” উৎসব উদযাপিত হলো। মন্দির কতৃপক্ষ কর্তৃক সপ্তাহ পূর্বে ঘোষিত “অন্নকূট” উৎসবটি অগনিত ভক্তগণকে সাথে নিয়ে পালিত হয়!
প্রতি বছর কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের প্রথম দিন পালিত হয় এই “অন্নকূট” বা গোবর্ধন উৎসব।”অন্ন” মানে ভাত আর “কূট” মানে পাহাড়।
রোববার (১৯ নভেম্বর) বেলা ১১টায় গোবিন্দের উদ্যেশ্যে ১৭০ পদের নিরামিষ ডাল-ভাজা-শাক-সব্জি-মিষ্টান্ন দ্রব্যাদি’র ভোগ নিবেদনের পর মন্দিরের পুরোহিত শ্রী পারিন্দ্র চক্রবর্তী মূল পূজা আরম্ভ করেন। এরপর শ্রীমদ্ভাগবত গীতা পারায়ন ও নাম সংকীর্তন অনুষ্ঠিত হয়।
পূজা সম্পর্কে ডেট্রোয়েট দুর্গা টেম্পলের সভাপতি শ্রী পংকজ দাস বলেন, ভক্তবৃন্দের আগ্রহে প্রচলিত এই উৎসব এখন থেকে প্রতি বছর দুর্গা টেম্পল পালন করবে। শনিবার দিনব্যাপী ও রোববার অতি প্রতুষে যেসকল নিবেদিতপ্রাণ পুরুষ ও মহিলা ভক্ত উৎসবকে সফল করতে নিরলস পরিশ্রম করেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা করেন পংকজ!
অন্নকূট কি??
ভাগবত পুরাণ বলে, ইন্দ্র-কৃষ্ণ দ্বৈরথেই জন্ম গোবর্ধন উৎসবের! ব্রজভূমিতে প্রচলিত ছিল হেমন্ত উৎসব। ব্রজবাসীরা গোবর্ধন পর্বতে গিয়ে দেবরাজ ইন্দ্রকে পূজা করত। কৃষ্ণ চেয়েছিলেন দূরবর্তী স্বর্গের দেবতাকে পূজা না করে বৃন্দাবনবাসী যেন কাছের দেবতাকে পুজা করেন।তিনি প্রবর্তন করেন গিরিযঞ্জ। নিজেই পর্বত অবতারে শ্রদ্ধার্ঘ্য গ্রহণ করতেন!নিজেকে পূজা না করে নতুন প্রচলিত এমন গিরিযঞ্জ সহ্য করতে না পেরে দেবরাজ ইন্দ্র বৃন্দাবনের উপরে এক নাগাড়ে সাতদিন ধরে প্রবল বর্ষণ ঘটাতে থাকেন। তখন শ্রীকৃষ্ণ নিজের কনিষ্ঠ আঙ্গুলে গোবর্ধন পর্বতকে তুলে তার নীচে আশ্রয় দিলেন সমগ্র বৃন্দাবনবাসীকে!অর্থ্যাৎ এভাবেই ধরিত্রীকে রক্ষা করেন বিধাতা!রণে ভঙ্গ দিলেন ইন্দ্র! তখন বৃন্দাবনে গোবর দিয়ে বানানো হয় ঢিপি যা গোবর্ধন পাহাড়ের প্রতীক এবং তার উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হয় ছাপ্পান্ন রকম নিরামিষ ভোগ প্রসাদ!
বিশ্ব ব্যাপী এই “অন্নকূট” উৎসবকে ব্যাপক প্রচলনের জন্য আচার্য্য ভক্ত বেদান্ত স্বামী প্রভুপাদের আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ ইসকনের অবদান অনস্বীকার্য!