জিরো-ক্যালরির কৃত্রিম চিনি হার্ট অ্যাটাক-স্ট্রোকের ঝুঁকি বর্ধক
নতুন এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে চিনির বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত জিরো ক্যালরির কৃত্রিম চিনি বা সুইটনার ‘ইরিথ্রিটল’ রক্তে জমাট বাঁধা, স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক এবং মৃত্যু ঝুঁকির অন্যতম কারণ । সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ডা. স্ট্যানলি হ্যাজেন গবেষণার প্রধান লেখক ও ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক লার্নার রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সেন্টার ফর কার্ডিওভাসকুলার ডায়াগনস্টিকস অ্যান্ড প্রিভেনশনের পরিচালক বলেছেন, ‘ইরিথ্রিটল ব্যবহারে ঝুঁকির মাত্রা একেবারেই কম নয়।’
নেচার মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন, হৃদরোগের ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের তাদের রক্তে সর্বোচ্চ মাত্রায় ইরিথ্রিটল থাকলে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি প্রায় দ্বিগুণ।
ডা. স্ট্যানলি হ্যাজেন আরও বলেন, ‘যদি কারও রক্তে ইরিথ্রিটলের মাত্রা নীচের ২৫ শতাংশের তুলনায় উপরের ২৫ শতাংশে থাকে, তবে তার হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি প্রায় দ্বিগুণ। ইরিথ্রিটল ডায়াবেটিসের মতো শক্তিশালী কার্ডিয়াক ঝুঁকির কারণগুলোর সঙ্গে সমতুল্য।’
প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, ইরিথ্রিটল রক্তের প্লাটিলেটগুলোকে সহজে জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। আর সেই জমাট বাধা রক্ত আবার ভেঙে হৃদপিণ্ডে গেলে হার্ট অ্যাটাক বা মস্তিষ্কে গেলে স্ট্রোক ঘটাতে পারে
গবেষণায় জড়িত নন, যুক্তরাষ্ট্রের ডেনভারের ন্যাশনাল জিউইশ হেলথ হাসপাতালের কার্ডিওভাসকুলার প্রিভেনশন অ্যান্ড ওয়েলনেস বিভাগের পরিচালক ডা. অ্যান্ড্রু ফ্রিম্যানও বলেছেন, ‘এটি অবশ্যই একটি শঙ্কার বিষয়।’ তিনি বলেন, ‘ইরিথ্রিটল ব্যবহারে রক্তে জমাট বাঁধার ঝুঁকি রয়েছে বলে মনে হচ্ছে তবে এ ব্যাপারে আরও গবেষণা প্রয়োজন। অধিকতর সতর্কতার স্বার্থে ডায়েটে আপাতত ইরিথ্রিটলের ব্যবহার কমিয়ে আনাই ভালো।’
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালোরি কন্ট্রোল কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক রবার্ট র্যাঙ্কিন এই গবেষণার প্রতিক্রিয়া হিসাবে জানান, ‘এই গবেষণা গত কয়েক দশকের বৈজ্ঞানিক গবেষণার বিপরীতে ফলাফল প্রদর্শন করছে। ইরিথ্রিটলের মতো কম ক্যালরির সুইটনারকে নিরাপদ মনে করে বৈশ্বিক নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ খাদ্য ও পানীয় প্রস্তুতে এর ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে।’
এদিকে, গবেষণাটি এখনো পর্যালোচনা করা হয়নি মর্মে এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে দ্য ইউরোপিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব পলিওল প্রডিউসারস।