আফগানদের উড়িয়ে বিশ্বকাপে শুভ সূচনা বাংলাদেশের
এবারের বিশ্বকাপের শুরুটা ভালো মতই করল বাংলাদেশ। ধর্মশালায় বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৬ উইকেটের বড় জয় তুলে নিয়েছে টাইগাররা। টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক সাকিব। ব্যাটিংয়ে নেমে সাকিব-মিরাজের স্পিন ঘূর্ণিতে মাত্র ৩৭.২ ওভারেই ১৫৬ রানে অলআউট আফগানরা। জবাবে শান্ত-মিরাজের জোড়া ফিফটিতে বাংলাদেশের প্রথম জয়।
ফলে বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় অব্যাহত থাকল বাংলাদেশের। এর আগে ২০১৫ ও ২০১৯ বিশ্বকাপেও বাংলাদেশের কাছে হেরেছিল আফগানিস্তান।
ধর্মশালার উইকেটে আগের সব ওয়ানডেতেই বোলারদের দাপট ছিল পরিষ্কার। আফগানদের অল্প রানে বেধে রাখাই ছিল বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তাই টস জিতে আফগানদের ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন টাইগার অধিনায়ক ।
আফগানিস্তানের দেয়া ১৫৭ রানের লক্ষ্যের জবাবে ইনিংসের শুরুতেই দেখে-শুনে খেলছিলেন দুই ওপেনার লিটন দাস-তানজিদ তামিম। কিন্তু ৫ম ওভারেই ঘটল বিপত্তি! ফজল হক ফারুকির করা বল কাভারে ঠেলে রান নেয়ার জন্য সামনের পায়ে একটু ঝুঁকেছিলেন লিটন। রান নেয়ার চেষ্টা করেননি তিনি। তবে অন্য প্রান্ত থেকে তামিম ততক্ষণে দৌড়ে উইকেটের মাঝে চলে এসেছিলেন, লিটনের কল না শুনেই। নজিবুল্লাহ জাদরানের সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট হন তানজিদ।
তামিমকে হারানোর কিছুক্ষণ পর ১৮ বলে ১৩ রান করা ডানহাতি লিটনও ফজলহকের বলে বোল্ড হন। চাপে পড়ে বাংলাদেশ। চাপ সামলাতে কার্যকারি এক জুটি গড়ে তোলেন মেহেদী মিরাজ ও নাজমুল শান্ত।
দুই দফা জীবন পেয়ে ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি হাঁকানো মিরাজ থামলেন অবশেষে। নাভিন উল হককে মিড অফের ওপর দিয়ে তুলে মারতে গিয়েছিলেন মিরাজ। কিন্তু সেখানে দারুণভাবে ক্যাচ তালুবন্দী করেছেন রহমত শাহ। সাজঘরে ফেরার আগে করেছেন ৭৩ বলে ৫৭ রান। তবে আউট হওয়ার আগে বাংলাদেশের জয় একপ্রকার নিশ্চিত করেই গেছেন তিনি।
মিরাজকে সমর্থন দেয়া শান্তও ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ফিফটি তুলে নেন। অধিনায়ক সাকিব ১৪ রানে ফিরলেও মুশফিককে সঙ্গে নিয়ে বাকি কাজটুকু সারেন শান্ত। ৫৯ রানে শান্ত ও ২ রানে মুশফিকুর রহিম অপরাজিত থাকেন। ফারুকি, নাভিন ও আজমাতুল্লাহ একটি করে উইকেট শিকার করেন।
এর আগে, ধর্মশালায় টাইগার স্পিনারদের সামলাতে হিমশিম খেয়েছে আফগানিস্তান। ধুকেছে পেস বোলিংয়েও। তাতে ১৫৬ রানের বেশি তারা করতে পারেনি। আফগানদের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৭ রান করেছেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ।
টাইগারদের হয়ে মিরাজ ২৫ রান খরচায় ও সাকিব ৩০ রান খরচায় নেন তিনটি করে উইকেট। এছাড়া শরিফুল দুটি, তাসকিন ও মোস্তাফিজ একটি করে উইকেট শিকার করেছেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আফগানিস্তান: ৩৭.২ ওভারে ১৫৬/১০ (গুরবাজ ৪৭, জাদরান ২২, রহমত ১৮, শহীদি ১৮, নাজিবুল্লাহ ৫, নবী ৬, ওমর ২২, রশিদ ৯, মুজিব ১, নাভিন ০, ফারুকি ০*; তাসকিন ৬-০-৩২-১, শরিফুল ৬.২-১-৩৪-২, মুস্তাফিজ ৭-১-২৮-১, সাকিব ৮-০-৩০-৩, মিরাজ ৯-৩-২৫-৩, মাহমুদউল্লাহ ১-০-৭-০)
বাংলাদেশ: ৩৪.৪ ওভারে ১৫৮/৪ (তামিম ৫, লিটন ১৩, মিরাজ ৫৭, শান্ত ৫৯*, সাকিব ১৪, মুশফিক ২* ; ফারুকি ৫-০-১৯-১, মুজিব ৭-০-৩০-০, নবীন ৫.৪-০-৩১-১, রশিদ ৯-০-৪৮-০, নবী ৬-১-১৮-০, ওমরযাই ২-০-৯-১)
ফলাফল: বাংলাদেশ ৬ উইকেটে জয়ী