বিনোদন

অভিনেত্রী হুমায়রা হিমুর রহস্যজনক মৃত্যু

ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী হুমায়রা হিমুর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। বুধবার তার মৃত্যুর খবর গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন অভিনয় শিল্পী সংঘের ​​​​​​সভাপতি অভিনেতা আহসান হাবিব নাসিম।

অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতি আহসান হাবিব নাসিম বলেন, ‘হিমুর ভাই ও বয়ফ্রেন্ড তাঁকে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল। হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক পুলিশকে খবর দিলে হিমুর বয়ফ্রেন্ড পালিয়ে যান। সঙ্গে করে হিমুর মোবাইল ফোনটিও নিয়ে যান।’

উত্তরা জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) জ্যোতির্ময় সাহা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘অভিনেত্রী হুমায়রা হিমুর রুমে সিলিং ফ্যান ছিল না। ফ্যান লাগানোর ওই হ্যাঙ্গারে লাইলনের রশি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁকে পাওয়া যায়। পরে তাঁর স্বজনেরা উদ্ধার করে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’

ধারণা করা হচ্ছে প্রেমিকের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরেই অভিনেত্রী হুমায়রা হিমু আত্মহত্যা করেছেন। হিমুর ওই প্রেমিক মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন রাফি। তাঁর সঙ্গে হিমুর দীর্ঘদিনের প্রেম ছিল। রাফির আলাদা সংসার রয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একটি প্রথম সারির গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানিয়েছেন উত্তরা জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মির্জা সালাউদ্দিন।

সালাউদ্দিন আরো বলেন, ‘অভিনেত্রী হিমু ছিলেন ব্রোকেন ফ্যামিলির। তিনি তাঁর এক পালিত ভাইকে নিয়ে উত্তরার ফ্ল্যাটে থাকতেন। প্রেমিক রাফির সঙ্গে হিমুর দ্বন্দ্ব হয়েছিল। এরপরই হিমু এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। এ ঘটনায় কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি। দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’

এটি হত্যা না আত্মহত্যা—এমন প্রশ্নের জবাবে এডিসি মির্জা সালাউদ্দিন বলেন, এটি এখনই বলা যাচ্ছে না। হিমুর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত বলা যাবে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। পালিয়ে যাওয়া প্রেমিককে আটকের চেষ্টা করা হচ্ছে।

অভিনয় শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক রওনক হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, আকস্মিক এমন খবর শুনে আহত হয়েছি। আমি জানি না এটা হত্যা নাকিও আত্মহত্যা সেটা নিশ্চিত বলতে পারছি না। ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। সেখানে গেলে বোঝা যাবে ঘটনা কি।

প্রসঙ্গত, ১৯৮৫ সালের ২৩ নভেম্বর লক্ষীপুর জেলায় জন্ম হুমাইরা হিমু। তিনি ইস্পাহানি কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ইডেন মহিলা কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। মঞ্চনাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি প্রথম নাট্য জগতে প্রবেশ করেন। ফ্রেঞ্চ নামক নাট্য দলের হয়ে তিনি অভিনয় করেন।

অসংখ্য টিভি নাটকে দেখা গেছে হিমুকে। ২০০৬ সালে ‘ছায়াবীথি’ নামের টেলিভিশন নাটকে প্রথম অভিনয় করেন। তার অভিনীত অসংখ্য জনপ্রিয় নাটকের মধ্যে রয়েছে, ‘ডিবি’, ‘সোনাঘাট’, ‘চেয়ারম্যান বাড়ি’, ‘বাটিঘর’, ‘শোনে না সে শোনে না’ অন্যতম। ২০১১ সালে ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ সিনেমাতে অভিনয়ের মাধ্যমে বড় পর্দাতেও অভিষেক হয় তার।

Back to top button